শাকির আহমেদ •
চাকরিচ্যুত ৬৭৮ শিক্ষকের বিরুদ্ধে এবার ফৌজদারি আইনে মামলাও হচ্ছে। জাল সনদে চাকরি নেয়ার শাস্তি হিসেবে তাদের ফেরত দিতে হবে চাকরিকালীন উত্তোলন করা বেতন ও ভাতার পুরো অর্থই। আর তারা পাবেন না অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধাও।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের তদন্তে বের হয়ে আসে জাল সনদ নিয়ে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের ৬৭৮ শিক্ষকের চাকরি নেয়ার বিষয়টি। এদের অধিকাংশই নিবন্ধন পরীক্ষার ভুয়া সনদ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। ফলে সুপারিশ করা হয়, এসব শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণের। নির্দেশ দেয়া হয় গৃহীত বেতন-ভাতা ফেরত দেয়ারও। চাকরির মেয়াদের শেষ পর্যায়ে থাকলেও অবৈধ সনদ ব্যবহারকারী এসব শিক্ষক পাবেন না কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধার অর্থও।
সনদের জাল জালিয়াতির বিষয়টি ফৌজদারি অপরাধ। তাই অবৈধ নিয়োগ পাওয়া এ ৬৭৮ শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণের পর এখন আইনীভাবে বিচারের মুখামুখি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, অভিযুক্তরা যে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন, সেগুলো তো ফেরত দিতেই হবে, সেই সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য তাদেরকে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি বলেন, তালিকা আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কল্যাণ ট্রাস্ট ও চাকরির পর যেখান থেকে সুযোগ-সুবিধা পায়, সেখানে পাঠিয়ে দিয়েছি। কাজেই সেখান থেকে সুবিধা পাওয়ার সুযোগ নেই।
জাল সনদে চাকরির ক্ষেত্রে শিক্ষকদের নৈতিক স্খলনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির ভিন্ন উদ্দেশ্য এবং এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার দুর্বলতাকে দায়ী করছেন শিক্ষাবিদরা।
এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জাল সনদ জমা দিয়ে যে শিক্ষকরা চাকরি পেয়েছেন, তাদের হয়ত বেতন-ভাতা কেটে নেয়া হবে বা তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হবে; সেটা ঠিকই আছে। তাদের অপরাধের শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু এ অপরাধের সঙ্গে আরও যারা যুক্ত আছেন, তাদেরকেও চিহ্নিত করতে হবে।
এছাড়াও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের আদলে একটি কমিশন গঠন করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-