কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের হলফনামায় বাহারী চমক

বিশেষ প্রতিবেদক •

কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই করতে ইচ্ছুক ছয়জনের হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামালের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি মামলা আছে। আর সম্পদ সবচেয়ে বেশি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসেদুল হকের (রাশেদ)।

আগামী ১২ জুন কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন হবে। ২৫ মে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এর পরের দিন প্রতীক বরাদ্দ করলে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারবেন।

হলফনামার তথ্যে দেখা গেছে, সাবেক মেয়র সরওয়ারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনসহ নানা অভিযোগে মোট ১৪টি মামলা আছে। বিএ পাস সরওয়ার কামালের এলপি গ্যাস ও রড-সিমেন্টের ব্যবসা আছে। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় হয় ৬ লাখ টাকা।

কৃষি খাত থেকে আয় ৩০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ৪ লাখ ৭ হাজার ৫৮৩ টাকা। নগদ আছে ১ লাখ টাকা। তবে ট্রাস্ট ব্যাংকে ঋণ আছে ৪ লাখ টাকার।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাসেদুল হক এসএসসি পাস। ব্যবসা থেকে বছরে তাঁর আয় ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৯০০ টাকা। তাঁর নগদ টাকার পরিমাণ ৫৫ লাখ ৮০ হাজার ১৩৯ টাকা। বাড়িভাড়া পান ৪ লাখ ৩১ হাজার ১৬৮ টাকা। কৃষি খাত থেকে আসে ৪৬ হাজার টাকা। নিজের একটি ডেইরি ফার্মে তাঁর বিনিয়োগ ৫০ লাখ টাকা। কৃষিজমি আছে ১১ লাখ টাকার। অকৃষিজমি আছে ৫ কোটি ১৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকার। প্রায় ২৯ লাখ টাকা দামের গাড়ি আছে তিনটি।

তবে পূবালী ব্যাংকে নিজের নামে ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং স্ত্রী জোসনা হকের নামে ৩৯ লাখ ৪ হাজার ২৬৪ টাকার ঋণ আছে। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা আছে। দুই মামলাতেই তিনি জামিনে মুক্ত আছেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান প্যানেল মেয়র মো. মাহবুবুর রহমান চৌধুরী স্বশিক্ষিত। তাঁর বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা আছে একটি। তবে হাইকোর্টের আদেশে ওই মামলা স্থগিত আছে। মাহবুবের ব্যবসা থেকে আয় ১৮ লাখ ৬০ হাজার ২১২ টাকা। তাঁর নগদ আছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৪৬ টাকা। তাঁর অকৃষিজমি আছে ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৮২ টাকার। তাঁর কোনো ব্যাংকঋণ নেই।

মেয়র পদে একমাত্র নারী প্রার্থী জোসনা হক স্বশিক্ষিত। ব্যবসা থেকে তাঁর আয় ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। নগদ আছে ২১ লাখ ১০ হাজার টাকা। তাঁর স্বর্ণালংকার আছে ২৫ ভরি। অকৃষিজমি আছে ২৪ শতাংশ। তবে পূবালী ব্যাংকে লোন আছে ৩৯ লাখ ৪ হাজার ২৬৪ টাকার।

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জগদীশ বড়ুয়ার লেখাপড়া অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা ছিল, দুটি মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ২০ হাজার। নগদ টাকা আছে ৩০ হাজার। ব্যাংকে জমা আছে দুই লাখ। কৃষিজমি ১ একর। অকৃষিজমি ১০ শতাংশ।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহেদুর রহমান ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিমখানার পরিচালক। তাঁর বার্ষিক আয় ১ লাখ ২০ হাজার। চাকরি থেকে পান ৬০ হাজার টাকা। নগদ টাকা আছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ১৬ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ৬১ জন কাউন্সিল প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আরও খবর