আবদুল্লাহ আল আজিজ, কক্সবাজার জার্নাল :
রমজানের শুরুতেই উখিয়ার সব পণ্যের বাজার চড়া। বেড়েছে মাছ-মাংস, সবজি দাম। পণ্যের ঊর্ধমূখি সূচকে বিপাকে সাধারণ মানুষ। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল, ছোলা, চিনি, আদা, রসুন। ন্যূনতম চাহিদা মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আয়-ব্যয়ের হিসাব মিলছে না তাদের।
বাজারে সবজির আমদানি বেশ ভালো। কিন্তু বিপত্তি পড়তে হচ্ছে কিনতে গেলে। সাধ ও সাধ্যে পাওয়া যাচ্ছে না কোনো সবজিই। কেজিপ্রতি আলু ৪০ টাকা, পিয়াজ ৪০ টাকা, রসুন ১৪০ টাকা, টমেটো ২০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, গাঁজর ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, শশা ৫০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০, ধইন্যাপাতা কেজিতে ১৬০ টাকা, লেবু প্রতি পিস ২০-২৫ টাকা ও কলার হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে সবজি খেয়ে বাঁচাও মুশকিল হয়ে উঠেছে, বলছেন নিম্নবিত্ত মানুষেরা।
অন্যদিকে মাছের বাজারে ইলিশের গায়ে তো হাত দেয়ার সুযোগ কম। অন্য মাছের দামও বাড়তি। ক্রেতারা বলছেন, মাছে-ভাতে বাঙালীর পাতে এখন প্রতি বেলায় মাছ জোটা ভাগ্যের বিষয়।
আগের চেয়ে বাড়তি দামেই গরুর মাংস সাড়ে ৭শ, আর খাশির মাংস সাড়ে ৯শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার ২৮০ টাকা আর সোনালী মুরগি হাঁকা হচ্ছে ৩৫০ টাকা, লেয়ার ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুরগির দাম নেওয়া হচ্ছে হালিতে ৪০ টাকা।
বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, মাংসের চাহিদা মেটাতে যারা ব্রয়লার মুরগির ওপরেই ভরসা করতেন চোখ বন্ধ করে তারাও এখন দিশেহারা।
খুশির খবর নেই মুদির বাজারেও। আদা, রসুন, পেঁয়াজ, ডাল, ছোলাও আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।
কেজি প্রতি মুড়ি ৭০ টাকা,সরিষার তেল ৫ লিটার ১৪০০ টাকা, মসুরির ডাল ১২০ টাকা, আদা ২০০ টাকা, ছোলা বুট ৯০ টাকা, আটা ৬০ টাকা, ময়দা ৮০ টাকা, চিনি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে কোটবাজার বাজার করতে আসা তাওহীদুল ইসলাম রাপী নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘আমার মনে হয় যে পণ্যের দাম বাড়বে সেই পণ্য মানুষ যদি না খায়, আশা করি পণ্যগুলোর দাম নাগালে চলে আসবে। কিন্তু আমাদের দেশে উল্টো যে পণ্যের দাম বাড়ে সেই পণ্য বেশি বেশি ক্রয় করে মানুষ। এর জন্য আরও বেশি দাম বেড়ে যায়।’
সংবাদকর্মী ইমরান আল মাহমুদ বলেন, রোজার আগেই বাজারে সব ধরনের পণ্যের দামে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এখন বাজারে এমন কোনো পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। এমনকি যেসব পণ্যের সরবরাহ ঠিকঠাক আছে সেগুলোও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে যারা চাকরিজীবী কিংবা নির্ধারিত আয়ের মধ্যে আটকে আছেন, তাদের কষ্টের শেষ নেই। সীমিত আয় দিয়ে চড়া মূল্যের বাজারে তারা কোনোদিকে কূল কিনারা করতে পারছেন না। বাজেট কাটছাঁট করতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠছেন। সব চাপ গিয়ে পড়ছে খাবারের ওপর।
কোটবাজার কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হারুণর রশীদ বলেন, ‘আসলে আমাদের কিছু করার নেই। চাহিদা অনুযায়ী পণ্য না আসায় আমাদের বেশি দামেই ক্রয় করতে হয়।’ এছাড়া আমাদের দেশে রমজান আসলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়।
পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও ভেজাল পণ্য বিক্রি করে এমন অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজিব।
তিনি বলেন,পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে অযথা কেউ মূল্য বৃদ্ধি করবে তা হবে না।
এদিকে, দাম বাড়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। সবকিছুর দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন তারা। বাজারে জোরালো মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-