কক্সবাজার জার্নাল ডেস্কঃ
মুসলিম সমাজে ইমাম, মুয়াজ্জিনের সম্মান শিক্ষকদের চেয়ে কম নয়! কেননা আমরা বলে থাকি সমাজে শিক্ষকদের সম্মান বেশী কারণ তারা মানুষ তৈরীর কারিগর। আমি ছোটবেলায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হিসাবে প্রথমেই মসজিদের মক্তব দিয়ে শুরু করেছি যা কিনা একজন মসজিদের ইমামের হাত ধরে। শহরের মুসলিম প্রজন্মদের সকালে মসজিদে যাওয়ার সুযোগ নাই কারণ ইংলিশ, বাংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি অনেক সকালে পাঠদান শুরু করে যা মক্তবে যাওয়ার জন্য বড় বাধাঁ। এবার আসুন আমি মক্তবে কি শিখেছি? কোরআন তেলওয়াত, ইবাদতের প্রয়োজনীয় দোয়া/ দরুদ।
অনেক আধুনিক মুসলিম মনে করতে পারেন এগুলা ত মধ্যযুগীয় পড়াশুনা। আমি বলব, আপনি যখন মরে যাবে তখন আপনার সন্তানরাই আপনার পরকালের মঙ্গলের জন্য দোয়া করতে পারবে যদি সে ছোটবেলায় মক্তবে শিক্ষা গ্রহন করে থাকে। নতুবা আপনার জানাজার নামাজ আর ঈদের নামাজের মধ্যে সে গুলিয়ে ফেলবে। ইমাম এবং মুয়াজ্জিনরা প্রতিনিয়ত পাড়া মহল্লা থেকে দেশের আনাচে-কানাচে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আপনি জানেন? গ্রামের একজন ইমাম বা মুয়াজ্জিনেরর মাসিক সম্মানি কত?
গ্রামে একজন ইমামের বেতন ৪/৫ হাজারের বেশী হয় না এবং একজন মুয়াজ্জিনের বেতন ৩/৪হাজারের বেশী হয় না।
এত অল্প সম্মানিতে কি ইমাম, মুয়াজ্জিনদের চলে? আপনারা যারা ভাল মানের সিগারেট খান, আপনারের মাসিক সিগারেটের খরচও এরচেয়ে বেশী! তাহলে বলতে পারেন ইমাম, মুয়াজ্জিনরা চলে কিভাবে? ওদের তো আর ঘুষ খাওয়ার কোন পথ নাই। অনেকেই ইমাম, মুয়াজ্জিনের পেশার পাশাপাশী কৃষি কাজ করে দাওয়াতের পর আপনার বাড়িতে লম্বা একটি দোয়া করে হুজুরের চোখ থেকে পানি ঝড়ায়! কারণ আপনার কাছ থেকে ভাল একটি হাদিয়া পাওয়ার জন্য।
হয়ত শহরের ইমাম,মুয়াজ্জিনদের সম্মানি অনেক ভাল। কারণ শহরের মানুষ বৃত্তবান এবং ওরা জানে বর্তমান যুগে একটি পরিবার চলতে কত খরচ হয়।। গ্রামের মানুষও এটা জানে তবে আর্থিক কারনে আর হয়ে উঠে না। আপনি বলতে পারেন ইমাম, মুয়াজ্জিনের আজান, নামাজ আর মক্তব পড়ানো ছাড়া কোন কাজ নাই। সারাদিন ত আজাইরা থাকে আর পরের ঘরে খেয়ে ভুড়ি বৃদ্ধি করে। এ কথা সত্য একজন ইমাম বা মুয়াজ্জিন দাওয়াতে গিয়ে যে খাবার খান সেটা আপনার আমার বাড়িতে প্রতিদিন করা এবং খাওয়া সম্ভব নয়। সর্বোপরি ইমাম, মুয়াজ্জিনের পেট ভালই চলে তবে তার পরিবার ও সামাজিক প্রয়োজন কি এই সামান্য বেতন দিয়ে চলে?
বাংলাদেশে সরকারী আমলাদের বেতন দিগুণ হইল শুনেছি বেসরকারী কামলাদের বেতনও চল্লিশ ভাগ বাড়বে!
ইমাম, মুয়াজ্জিনের বেতনবাড়ার কোন সম্ভাবনা নাই। কারণ ওরা সরকারী বা বেসরকারী কামলা নয়। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কামলা।
আমি জানি, আমার লেখাটা কোন কাজে আসবে না। তবুও লিখলাম একটা পরিবর্তনের আশায়। যে দিন সরকারীভাবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের
ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বেতনের একটি স্কেল হবে। সরকার ঐ স্কেলে ভর্তুকি দেওয়ার মাধ্যমে ইমাম,
মুয়াজ্জিন সহ সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সমাজিক, আর্থিক সচ্চলতা নিরাপদ করবে। যেন কারো দক্ষিণা বা দোয়ার জন্য অর্থের প্রয়োজন না হয়।
মোঃ মাসুম হোসেন
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-