টেকনাফে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে গণমাধ্যম কর্মীদের হুশিয়ারী!

টেকনাফ অফিস:


টেকনাফ প্রেসক্লাবের নির্বাহি সদস্য সাংবাদিক জসিম উদ্দিন টিপুর বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারে দাবীতে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন মানববন্ধন পালন করেছে।

এই মিথ্যা মামলা অবিলম্বে তদন্ত স্বাপেক্ষ প্রত্যাহারের জন্য থানা পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছে। অন্যথায় টেকনাফের সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করবেন বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন।

৪ঠা মার্চ বিকাল ৫টায় টেকনাফ প্রেসক্লাবের সামনে টেকনাফ প্রেসক্লাব,বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম টেকনাফ উপজেলা শাখা,টেকনাফ সাংবাদিক ফোরাম এবং ক্রাইম রিপোর্টার সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে সাংবাদিক জসিম উদ্দিন টিপুর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে এক মানববন্ধন শুরু হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন টেকনাফ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বর্তমান আহবায়ক আলহাজ¦ মোহাম্মদ ছৈয়দ হোছাইন, সাবেক সহসভাপতি আশেক উল্লাহ ফারুকী, আলহাজ¦ মুহাম্মদ তাহের নঈম,বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম টেকনাফ উপজেলা শাখার সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, টেকনাফ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আমান উল্লাহ কবির,টেকনাফ ক্রাইম রিপোর্টার সোসাইটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ভূলু,বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম টেকনাফ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আরাফাত সানি প্রমুখ। এসময় টেকনাফ প্রেসক্লাবের সদস্য আব্দুল্লাহ মনির, নুরুল হক, আব্দুর রহমান, কায়সার পারভেজ চৌধুরী, হুমায়ুন রশিদ, ক্রাইমস রিপোর্টার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জিয়াবুল, সাংবাদিক ফোরামের সাবেক সভাপতি মৌলভী মোঃ জুবায়ের,টেসাসের মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম,কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহেদ, টেকনাফ উপজেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মাহফুজুর রহমান, সাংবাদিক নেতা শেখ রাসেলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃৃন্দ ও কর্মরত সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

এতে বক্তারা বলেন,টেকনাফ প্রেসক্লাবের সদস্য,উন্নয়ন কর্মী ও শিক্ষানুরাগী জসিম উদ্দিন টিপুকে বিশেষ মহলের ইন্ধনে এলাকার স্বীকৃত দূবৃর্ত্ত চক্র কর্তৃক সাজানো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির ঘটনায় আমরা চরমভাবে ক্ষুদ্ধ। আমরা এই ধরনের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রশাসনকে বিষয়টি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে নিরপরাধ সাংবাদিককে মিথ্যা মামলায় হয়রানি থেকে রেহাই দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় টেকনাফের সর্বস্তরের সাংবাদিক সমাজ আগামীকে দূর্বার আন্দোলনের কর্মসূচী দিয়ে রাহপথে নামতে বাধ্য হবে বলে হুশিয়ারী দেন।

উল্লেখ্য, গত ২রা মার্চ রাতে উপজেলার হ্নীলা রঙ্গিখালীর দুদু মিয়ার পুত্র জাকের হোছাইন (২৩) বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। যার নং-১০/০২-০৩-২০২৩ইং। উক্ত মামলায় নামীয় ১১জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪জনকে আসামী করা হয়েছে। এতে সাংবাদিক জসিম উদ্দিন টিপুকে ষড়যন্ত্রমূলক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং হয়রানির লক্ষ্যে মিথ্যা আসামী করা হয়েছে। ঘটনার সময় সাংবাদিক জসিম উদ্দিন টিপু কর্মরত সংস্থায় দায়িত্বরত ছিল।

সাংবাদিক জসিম উদ্দিন টিপু একাধারে টেকনাফ প্রেসক্লাবের সদস্য,টেকনাফ টাইমস ডটকমের সম্পাদক, টেকনাফ সাংবাদিক সমিতির যুগ্নসম্পাদক, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য,বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার কর্মী, টেকনাফের সর্বোচ্চ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রঙ্গিখালী দারুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সদস্যসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছে।

জসিম উদ্দিন টিপু দীর্ঘদিন ধরে পেশাদার সাংবাদিকতায় কর্মরত থেকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, মানবপাচার, ডাকাতি, অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়সহ মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে তুখোড় লেখনির মাধ্যমে আলোচিত হয়। এতে উক্ত মহল ক্ষুদ্ধ হয়ে এই মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সাহসী কলম সৈনিককে হয়রানির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষাভাবে তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রত্যাহারের জন্য টেকনাফ মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ফেব্রুয়ারী বিকালের দিকে অগ্নিকান্ডে হ্নীলা রঙ্গিখালী স্কুল পাড়ার ছিদ্দিক আহমদ ফকির, মাওলানা শফিকুল ইসলাম জিহাদী, দিন-মজুর রশিদ আহমদ, মোহাম্মদ ইউনুছ ও মিরজানা বেগমের ঘর পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের অনুদান প্রদানের পাশাপাশি ঘর সহায়তার জন্য ইউএনও এর মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করার পরামর্শ দেন।

পরদিন ১লা মার্চ সকালে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ইউনুছের স্ত্রী জাহেদা বেগম অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ঘরের খোলা আকাশে দাড়িয়ে ইউএনও এর মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করার জন্য আইডি কার্ড নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় স্থানীয় দুদু মিয়ার পুত্র সলিম এসে আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয়।

জাহেদা বিষয়টি স্থানীয় মেম্বারকে সালিশ দিলেও মেম্বার আইডি কার্ড উদ্ধার করতে পারেনি। এতে জাহেদা নিরুপায় হয়ে স্থানীয় গুরা মিয়ার পুত্র বাঘাইশ্যাকে ফোন করে আইডি কার্ড উদ্ধার করে দিতে আহবান জানায়। এই খবর পেয়ে ঊলুচামরী কোনার পাড়ার মরহুম হাজী রুহুল আমিনের পুত্র আনোয়ার প্রকাশ লেড়াইয়া, গুরা মিয়ার পুত্র বাগাইশ্যাসহ ৪/৫জন লোক ঘটনাস্থলে যায়।

এরপর দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি, সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় জনৈক হামিদ উল্লাহর স্ত্রী ছমুদা বেগম গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত হয়। এসময় সাংবাদিক জসিম উদ্দিন টিপু কর্মরত সংস্থার অধীনে উখিয়ায় কর্মরত থাকলেও একটি মহল পরিকল্পিতভাবে আহত মহিলার স্বীকারোক্তি আদায় করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারসহ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির সুযোগ নেয়।

টেকনাফে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবীতে এই কর্মসূচী পালন করে। ###

আরও খবর