ডেস্ক রিপোর্ট •
কক্সবাজার জেলার অন্যতম প্রাকৃতিক সংরক্ষিত দ্বীপ সোনাদিয়া মারাত্বক পরিবেশগত হুমকির মধ্যে পড়েছে। কিন্তু মুনাফালোভী পর্যটন ব্যবসায়ীরা ইকোট্যুরিজমের নামে সেখানে ভেঙে ফেলা হয়েছে বালিয়াড়ি।
দ্বীপের কেয়া, নিশিন্দার ঝোপ পুড়িয়ে, ঝাউ-প্যারাবন উজার করে হচ্ছে হোটেল- মোটেল।
এতে স্পর্শকাতর এই দ্বীপের জীববৈচিত্র্য বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশ ও প্রাণী গবেষকরা।
তবে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বলছেন, সোনাদিয়ার তিনশ গ্রামবাসীকে সরিয়ে পুরো দ্বীপে জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করা হবে। মাত্র চার ভাগ স্থানে পর্যটন থাকবে।
মহেশখালীর দক্ষিণে, বঙ্গোপসাগরে জেগে থাকা এক ত্রিমুখী বেলাভূমি সোনাদিয়া। সূর্যোদয়ে এখানে সোনা ঝরে। মিষ্টি রোদে সার ধরে বেরিয়ে আসে লাল কাঁকড়া। সৈকতের বালিতে আঁকে নকশা।
গাঙচিল-জিরিয়াসহ নানা পাখির বাস এখানে। সোনাদিয়া হয়েই চলাচল করে সাইবেরিয়া, ইউরেশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার পরিযায়ী পাখি। বিপন্ন স্পুন বিল স্যন্ডপাইপারও বিশ্রাম নেয় এখানে।
বেজা চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, স্পর্শকাতর এলাকা বলেই এখানে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। তবে অর্থনৈতিক অঞ্চলের আওতায় পড়ায় সোনাদিয়াকে ঢেলে সাজাতে চায় কর্তৃপক্ষ। প্রায় বিশ হাজার একর জায়গার মাত্র চার ভাগে হবে পরিবেশে বন্ধব পর্যটন।
তবে সোনাদিয়ায় এরই মধ্যে স্থানীয়রা শুরু করে দিয়েছে পর্যটন বিকাশের কাজ। বালিয়াড়ি ভেঙে করা হয়েছে সমতল। পোড়ানো হয়েছে কেয়া-নিশিন্দার বন। চলছে ঝাউ-প্যারা বন উজাড়।
গড়ে উঠেছে গোটা ত্রিশ আবাসিক হোটেল। সৈকত দখল করে হয়েছে টঙ ঘর। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত চলছে পর্যটকদের উন্মাদনা।
গবেষকরা বলছেন, সোনাদিয়ায় নতুন সৈকত হলেও তা স্থায়ী হচ্ছে পাঁচ মাস। বর্ষা-জলোচ্ছ্বাসে তা ভেঙে যায়। এ অবস্থা সোনাদিয়ার জন্য ডেকে আনছে চরম বিপর্যয়।
স্পর্শকাতর প্রাকৃতিক এই এলাকায় জীববৈচিত্র্য টিকে থাকবে না-কি ঘটবে অবাধ পর্যটনের বিকাশ, এ প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশ গবেষকেরা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-