আজাদী •
- মিনি সেক্রেটারিয়েট ফর চট্টগ্রাম প্রকল্প কয়েক মাসের মধ্যে চুড়ান্ত হবে এরপর প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন : জেলা প্রসাশক
‘আগামী এক বছরের মধ্যেই মিনি সেক্রেটারিয়েট ফর চট্টগ্রাম প্রকল্পের কাজ শুরু হবে’। ২০২১ সালের শেষের দিকে ঘোষণাটি দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান। পরের বছর বিভিন্ন সময় তিনি জানিয়েছিলেন, প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু হবে। এর মধ্যে ২০২২ সাল শেষ হয়ে ২০২৩
সাল চলছে। কিন্তু এখনও শুরু হয়নি প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ। এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত করা যায়নি প্রকল্পের নকশা। এর মধ্যে পার হয়ে গেছে একটি বছর।
নকশা প্রস্তুত কার্যক্রমের সাথে জড়িত চট্টগ্রামের বর্তমান জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের নকশা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিভিন্নজন বিভিন্ন মতামত, মন্তব্য দিচ্ছেন। আমরা সেগুলো দেখছি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।
বলা যায়, নকশা চূড়ান্তের বিষয়টি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখন পরিবর্ধন, সংযোজনের কাজ চলছে। কয়েক মাসের মধ্যে নকশা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা চূড়ান্ত নকশাটি উপস্থাপন করব। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন মিললে কাজ শুরু হয়ে যাবে। মিনি সেক্রেটারিয়েট ফর চট্টগ্রাম প্রকল্পটি
নির্মিত হবে নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন কর্ণফুলী পাড়ের হামিদ চরে। নদী লাগোয়া চারটিতে গড়ে তোলা হবে ৪৪টি সমন্বিত অফিস ভবন। নির্মাণ কাজ শেষ হলে তা মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ার মতো দেখাবে। চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা আজাদীকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর নকশা পরিকল্পনা কমিশনে যাবে। সেখান থেকে যাবে একনেকে।
নগরীর চাপ কমাতে ও সাধারণ মানুষকে এক জায়গায় নানা সেবা দিতে গ্রহণ করা হয় এই প্রকল্প। এই উদ্যোগে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট অনেকে মতামত প্রদান করেছেন। সংশ্লিষ্টদের মতামতের বিষয়ে গত বছরের আগস্টে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর
রহমান বলেছিলেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস হামিদ চর প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশাটি দেখেছেন। পরে সার্কিট হাউসে জঙ্গল সলিমপুর প্রকল্প নিয়ে হওয়া মতবিনিময় সভা শেষে মুখ্য সচিব ফের নকশাটি দেখেন এবং মতামত দেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এর
সংযোজন কাজ শেষ হবে। এরপর আগামী ১৫ আগস্টের পর সংযোজনকৃত চূড়ান্ত নকশা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন মিললে এবং প্রয়োজনীয় কিছু কার্যক্রম শেষে শুরু হয়ে যাবে নির্মাণ কার্যক্রম।
এদিকে গত বছরের ১৮ জুলাই হামিদ চর প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে জানিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক বলেছিলেন, আনোয়ারার যে এলাকায় কর্ণফুলী টানেল গিয়ে শেষ হয়েছে সেখান থেকে চান্দগাঁওয়ের হামিদ চর প্রকল্পে বা মিনি সেক্রেটারিয়েট ফর চট্টগ্রাম প্রকল্পে যাবে ক্যাবল কার ও ওয়াটার বাস।
আকাশ ও নৌ পথে প্রকল্প এলাকায় যাতায়াত করবে এ যানবাহনগুলো। এজন্য সেখানে নির্মাণ করা হবে একটি কমন জেটি। নকশায় কর্পোরেট অফিসের জন্য কয়েকটি ভবনও যুক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে নকশায় এসব সংযোজন করা হয়।
তৎকালীন জেলা প্রশাসক বলেছিলেন, ৭৫ একর জায়গার উপর নির্মিত হতে যাওয়া এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পাল্টে যাবে চট্টগ্রামের প্রশাসনিক কার্যক্রমের চিত্র। সেবা প্রার্থীরা সহজে এক জায়গা থেকে নানা রকম সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, প্রকল্পের নকশায় থাকবে জুডিশিয়ারি বা আদালতের জন্য নির্ধারিত স্পেস, প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি স্যাটেলাইট অফিস, মেলার জন্য স্পেস, সার্কিট হাউস ও রিসোর্ট, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, স্পোর্টস কমপ্লেঙ, কনভেনশন সেন্টার, ক্লাব হাউস, শপিং মল, মাল্টি স্টোরেড কার
পার্কিং, স্কুল–কলেজ, পরিবহন পুল, পেট্রোল পাম্প, স্মৃতিসৌধ, নভোথিয়েটার, মসজিদ, মুক্তমঞ্চ ও কালচারাল কমপ্লেঙ, কনডোমিনিয়াম, সরকারি কর্মচারীদের আবাসিক এলাকা, ওয়াচ টাওয়ার, হাইটেক পার্ক, সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারী হাসপাতাল, ইউটিলিটি ভবন, নার্সিং ইনস্টিটিউট, ক্যাবল কার, ওয়াটার বাস ও কমন জেটি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-