কক্সবাজারে হোটেল কক্ষে তরুণী খুনে ইয়াবা কারবারি

বিশেষ প্রতিবেদক •

টাকা নিয়ে বাক–বিতন্ডার জেরে’ কক্সবাজারে হোটেলে এক নারীকে হত্যা করেছে ইয়াবা পাচারকারী মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৫১)।

হত্যার ঘটনার তিনদিন পর তাকে গত শুক্রবার হাটহাজারী চৌধুরীহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোস্তাফিজুর রহমান বাগেরহাট সদর উপজেলার আতাইকাঠী গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে। কঙবাজার পৌর সদরের ‘সি বার্ড’ হোটেলের কক্ষ থেকে গত বুধবার আনুমানিক ২৭ বছর বয়সী ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার স্বামী–স্ত্রী পরিচয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ওই নারীকে নিয়ে হোটেলটিতে ওঠেন। হোটেলের সিসিটিভির ভিডিও দেখে তাদের শনাক্ত করে র‌্যাব। র‌্যাব–৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, বুধবার হোটেলে ওঠার পর দুপুরে কক্ষে তালা দিয়ে মোস্তাফিজুর চলে যায়।

সেদিন হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কক্ষ থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাফিজুর ওই নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তিনি বলেন, শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ওই নারীকে হোটেলে নিয়ে যায় মোস্তাফিজুর। হোটেলের রেজিস্ট্রারে ওই নারীর নাম লেখা হয় জেসমিন আখতার।

মোস্তাফিজুর জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে জানিয়েছে, হোটেল রুমে অবস্থানের সময় টাকা নিয়ে বাক–বিতন্ডার জেরে ক্ষোভের বশে ওই নারীকে হত্যা করে মোস্তাফিজুর। প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন ও মৃত্যুর পর শারীরিক লক্ষণগুলো বিবেচনা করে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

মোস্তাফিজুরের বিরুদ্ধে মাদক পরিবহনের চারটি মামলা রয়েছে জানিয়ে কর্নেল মাহবুব বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সে কঙবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা পরিবহন করত। তার নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। সে মাদকসেবী এবং মাদক পরিবহনের কাজে জড়িত। মোস্তাফিজুর এর আগে পাঁচবার গ্রেপ্তার হয়েছে; কখনও

ঢাকা থেকে আবার কখনও কঙবাজার থেকে। শুধু তাই নয় ঢাকার দক্ষিণখান থানায় মোস্তাফিজুরের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগে ২০১৮ সালের ২৩ জুন এক নারী একটি মামলা করেছিল বলে জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, মোস্তাফিজুরকে তল্লাশি করে তার পকেটে যৌন উত্তেজক ওষুধ পাওয়া গেছে। ঘটনার দিন সে ওই ওষুধ সেবন করেছিল। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নখের আঁচড়ের দাগ আছে। পরিচয় যাচাইয়ে ওই নারীর আঙুলের ছাপ নিয়ে এনআইডি সার্ভারের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করা হলে তা পাওয়া যায়নি বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা মাহবুব।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তার পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কেউ অভিভাবকত্ব দাবি না করায় আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয়েছে তার লাশ।

আরও খবর