এম বেদারুল আলম •
কক্সবাজার জেলায় গত বছর এপ্রিল থেকে চলা ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শেষে নতুন ভোটার অর্ন্তভুক্ত হয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ৯৯৫ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়াল ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৩শ ৯৫ জন। যা হালনাগাদের আগে ছিল ১৫ লাখ ১৭ হাজার ৪০৬ জন।
হালনাগাদ শেষে জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে উপরোক্ত তথ্য পাওয়া গেছে। তবে বিভিন্ন উপজেলায় ফরম সংকটের কারণে শুরুর দিকে অনেকে ভোটার তালিকায় নিবন্ধন হতে পারেনি বলে অভিযোগ থাকলেও জেলা নির্বাচন অফিসার বলছেন এটি চলমান প্রত্রিয়া। বাদপড়াদের আমরা যাছাই বাছাই করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। রোহিঙ্গাদের কারণে হালনাগাদে বেশ কড়াকড়ি থাকায় আমরা চেষ্টা করেছি কোন রোহিঙ্গা যেন ভোটার হতে না পারে।
তালিকায় স্থান পাওয়া নতুন নিবন্ধিত ২ লাখ ৩ হাজার ৯৫৯ জনের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৩ হাজার ৬৯০ জন এবং নারী রয়েছে ৯০হাজার ২৬৮ জন। নিবন্ধিত ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ, ছবি উত্তোলন, ডাটা আপলোড শেষ হয় গত ডিসেম্বরে।
জেলা নির্বাচন অফিসার এসএম শাহাদাত হোসেন জানান, কক্সবাজারে গতবছর এপ্রিল মাস থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম আরম্ভ হয় যা শেষ হয় ডিসেম্বরে।
২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৬ বছর পূর্ণ হয়েছে তাদের সকল তথ্য তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে তবে তারা ভোটার তালিকায় অর্ন্তভূক্ত হবে ১৮ বছর পূর্ণ হলে। তাদের ডাটাবেজ নির্বাচন কমিশনে স্টোরেজ থাকবে। ১৮ বছর পূর্ণ হলেই তারা অটো ভোটার তালিকায় নাম চলে আসবে।
উপজেলা ভিত্তিক হালনাগাদের তালিকায় স্থান পাওয়া নুতন ভোটারের সংখ্যা হল চকরিয়ায় ৫১,৯৩৯ জন, পেকুয়ায় ২২১৩২ জন, কুতুবদিয়ায় ১১৯৫৬ জন, মহেশখালীতে ২৮৯০০ জন, কক্সবাজার সদরে ৩৮৬৫১ জন, রামুতে ১৬৭১৮ জন, উখিয়ায় ১৭১৭৮ জন, টেকনাফে ১৬৪৮৫ জন। জেলায় করা হয়েছে ২,০৩,৯৫৯ জন নতুন ভোটার।
হালনাগাদের পর জেলার ৮ উপজেলা, ৪ পৌরসভা, ৭১ ইউনিয়নে বর্তমান ভোটার সংখ্যা ১৭ লাখ ৭৪১ হাজার ৩৬৫ জন।
হালনাগাদের পর উপজেলা ভিত্তিক বর্তমান ভোটার পরিসংখ্যান হল চকরিয়ায় ৩,৭৮,৯৮৯ জন। পেকুয়ায় ১৪,৩৪৭৫ জন। কুতুবদিয়ায় ১,০০৫৮৫ জন। মহেশখালীতে ২,৬১,৭৮৬ জন। কক্সবাজার সদরে ৩,২৫,৭১৭ জন। রামুতে ১,৯৫,৩৬৮ জন।
উখিয়ায় ১,৫৭,৪৫৪ জন। টেকনাফে ১,৭৭,৯৯১ জন। এবারের হালনাগাদে তথ্য সংগ্রহে কাজ করেছে ৭৭৫ জন তথ্য সংগ্রহকারি, সুপারভাইজারের সংখ্যা ছিল ১৭২ জন।
হালনাগাদের সার্বিক বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা আমাদের টার্গেটে পৌছাতে পেরেছি। যারা বাদ পড়েছেন তাদের চিন্তা করার কিছুই নেই কেননা এটি চলমান প্রক্রিয়া। পুণরায় সরকার তারিখ ঘোষণা করলে আবার আমরা কাজ করব। আমরা পুরো টিম সতর্কতার সাথে কাজ করেছি যাতে তালিকায় কোন রোহিঙ্গা অর্ন্তভুক্ত হতে না পারে।
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিমূল শর্মা বলেন- ভোটার তালিকায় মায়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে ছিলাম আমরা। নির্বাচন কমিশন (ইসি) আমাদের যে নির্দেশনা দিয়েছে তা শতভাগ মেনে হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। হালনাগাদের প্রজ্ঞাপনে দেয়া নির্দেশনার মধ্যে অন্যতম ছিল বিশেষ এলাকা চিহ্নিত করে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকাভুক্তি যেন কোনক্রমেই না হয় সেদিকে সচেতন হওয়া।
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ৩০টি বিশেষ উপজেলার মধ্যে কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, টেকনাফ, রামু, পেকুয়া, উখিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ি আমরা প্রত্যেক ভোটারের কাছ থেকে ২৬টি ডকুমেন্ট গ্রহণ করি এবং নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে আপলোড করি যাতে কোন রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে না পারে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-