চকরিয়া প্রতিনিধি •
কক্সবাজারের চকরিয়ায় সোহাগ পরিবহনের যাত্রীবাহী এক বাসের চাকায় পৃষ্ট হয়ে মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম (১৮) নামে এক টমটম চালক ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। বাস থামাতে সিগনাল দেয়ায় ওই টমটম চালককে ধাক্কার পর পিষে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পরে পিছু ধাওয়া করে সোহাগ পরিবহনের গাড়িটি আটক করে চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশকে হস্তান্তর করেছে স্থানীয়রা।
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মাহাসড়কের নলবিলা বনবিট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তারেকুল ইসলাম কাকারা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডস্থ শাহ্ উমর নগর পাহাড়ী গ্রামের মৃত মোক্তার আহমেদের ছেলে।
ঘটনার বিবরণ ও মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন কাকারা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এনামুল হক। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, তারেক টমটম গাড়ি নিয়ে বানিয়ারছড়া থেকে চিরিঙ্গায় যাচ্ছিল। একই সময় পেছন থেকে আসে ঢাকা থেকে কক্সবাজারমূখী সোহাগ পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি। নলবিলা ঢালায় পৌঁছলে বাসটি টমটমের একপাশে ধাক্কা দিলে টমটমটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে টমটমটি সড়কের পাশে রেখে চালক তারেক সড়কের উপর দাঁড়িয়ে দু-হাত নেড়ে সোহাগ পরিবহনের বাসটি থানাতে সিগনাল দেয়। কিন্তু বাসের চালক সিগনাল উপেক্ষা করে তারেককে প্রথমে সরাসরি ধাক্কা দিলে তিনি সড়কের উপর পড়ে যান, এসময় তার উপর দিয়ে বাসটি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা এই করুণ ও মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে বিভিন্ন গাড়ি নিয়ে পিছু ধাওয়া করে চকরিয়া পৌরসভার বাসটার্মিনাল এলাকায় পৌঁছে গাড়িটি আটকায়। তাঁরা খবর দিলে চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশ গিয়ে গাড়িটি জব্দ করে। গাড়ি জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইওয়ে থানার ওসি ইমন কান্তি চৌধুরী।
নিহতের বড় ভাই আরিফুল ইসলাম বলেন, আমার বয়স ২১ বছর, আমার ছোট ভাই তারেকের বয়স ১৮ বছর। বাবা প্রয়াত হওয়ায় ছোট ভাইকে ধার-হাওলাত করে আয়-রোজগারের জন্য একটি টমটম কিনে দেই। পাশাপাশি তার ১৫ বছর বয়সে ঘরমুখী করতে তারেককে বিয়ে করানো হয়। তার দেড় বছর বয়সী এক সন্তানও রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী হারুন, হাবীবসহ কয়েকজন বলেন, সিগনাল দেয়ার পর বাসটি থামিয়ে টমটমের ক্ষতি বাবদ ৩-৪শ’ টাকা দিলেই হতো। তা না করে তাকে ধাক্কা দিয়ে পিষিয়ে মৃত্যুর ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা নয়। এটি ইচ্ছাকৃত হত্যা।
এদিকে, বাদে আছর নিহত তারেকুল ইসলামের মরদেহ শাহ্ উমর নগরে এনে নামাজের জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী বলেন, এই ঘটনায় বাসটি জব্দ করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলছে। পলাতক রয়েছে চালক ও হেলপার।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-