নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশজুড়ে বই উৎসব উদযাপন করা হবে আজ রবিবার। প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে বই বিতরণের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হবে। বিগত দুই বছর করোনার কারণে বই উৎসবে অনেকটা ভাটা পড়ে। তবে এবার উৎসবকে কেন্দ্র করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বাড়তি উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
এ বছর উপস্থিতির হার কিছুটা বেশি হবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও বই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর আজ গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সকাল ১০টায় মাধ্যমিকের বই উৎসবের উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাথমিকের বই উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। এ ছাড়া দেশের এমপি-মন্ত্রীসহ বিশিষ্টজনের অংশগ্রহণে দেশের প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এই বই উৎসব পালন করা হবে। শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নতুন বছরের পাঠ্য বই।
বই উৎসবে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ। এ বছর নানা সংকটের কারণে এই স্তরের বই ছাপায় ধীরগতি দেখা দেয়। তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বলছে, এ পর্যন্ত মাধ্যমিকের ৮১ শতাংশ এবং প্রাথমিকের ৭০ শতাংশ বই সারা দেশে সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি বই আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে সরবরাহ করা হবে।
এনসিটিবি ও মুদ্রণ শিল্প সমিতি সূত্রে জানা যায়, দেশে কাগজ তৈরির ভার্জিন পাল্প (কাগজ তৈরির মণ্ড) না থাকা, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে বই ছাপার কাজ শুরু করা যায়নি। টেন্ডারপ্রক্রিয়ায় ধীরগতির কারণে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়েছে প্রাথমিকের বই প্রস্তুতের কাজ। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মুদ্রণ মালিকদের আস্থাহীনতায় টেন্ডারপ্রক্রিয়ায় দুই মাস সময় অতিবাহিত হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের পর গত ৫ ডিসেম্বর থেকে প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ শুরু হয়।
এনসিটিবি সারা দেশে যে পরিমাণ বই বিতরণ করেছে, তাদের হিসাবের থেকে জেলা পর্যায়ে পাঠানো বইয়ের সংখ্যা তুলনামূলক কম বলে জানিয়েছে মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতি। গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা পর্যায় থেকে পাওয়া তথ্যেও এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এ সময় প্রাথমিকের বই সরবরাহ হয়েছে খুলনা বিভাগে ৩৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম জেলায় ২৬.৩ শতাংশ, ময়মনসিংহ জেলায় ৩০ শতাংশ এবং নেত্রকোনায় ২২ শতাংশের কিছু বেশি। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রেসে ছাপানো বইয়ের মান কাঙ্ক্ষিত উজ্জ্বলতা ৮৫ শতাংশের নিচে থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও এ উজ্জ্বলতা ছিল ৬৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যেসব স্থানে বই পাওয়া যায়নি, খোঁজ পাওয়ামাত্র সেখানে বই সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মানিকগঞ্জে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই না পাওয়ার বিষয়ে জানতে পেরে আমরা শনিবার (গতকাল) বই পাঠিয়েছি। ’
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-