নিজস্ব প্রতিবেদক •
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৮-পশ্চিম) রোহিঙ্গা মাঝি (নেতা) মোহাম্মদ হোসেন ওরফে শফিককে (৩০) গুলি করে হত্যার পর ৩২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। কাউকে আটকও করা যায়নি।
নিহত মোহাম্মদ হোসেন ওরফে শফিক ওই আশ্রয়শিবিরের বি-৩২ ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ সিদ্দিকের ছেলে। তিনি ক্যাম্প-৮ পশ্চিম অংশের বি ব্লকের হেড মাঝি ছিলেন।
পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে বালুখালী আশ্রয়শিবিরের বি-১৬ ব্লকের ডিআরসি পুষ্টিখানা অফিসের সামনে মোহাম্মদ হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মি’র (আরসা) সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।
এ ঘটনায় মামলা না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আশ্রয়শিবির গুলোতে অভিযান চালাচ্ছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা। তবে আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কাউকে থানায় হস্তান্তর করেনি এপিবিএন। জড়িত কাউকে আটকের পর মামলা হবে।
আশ্রয়শিবিরগুলো এপিবিএনের আওতাভুক্ত। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএন একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
এর আগে গতকাল ৮ এপিবিএনের মুখপাত্র ও সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন ও মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা মাঝি শফিক সোমবার সকাল ১০টার দিকে আশ্রয়শিবিরের একটি মাদ্রাসার বার্ষিক অনুষ্ঠান শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে আরসার রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা হঠাৎ তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়। বুকে ও গলায় গুলি লাগে তাঁর। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে আশ্রয়শিবিরের ব্র্যাক হাসপাতালে এবং অবস্থার অবনতি হলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে মাঝি আছেন প্রায় আড়াই হাজার। একাধিক আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে আরসা সন্ত্রাসীরা আশ্রয়শিবিরের কয়েক মাঝিকে বসতঘর থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে।
এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরসার প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিসহ অনেকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও কেউ গ্রেপ্তার হননি। আশ্রয়শিবিরের অন্তত ৭০০ মাঝি আরসা সন্ত্রাসীদের আতঙ্কে ভুগছেন। প্রাণনাশের হুমকিতে বেশ কয়েক মাঝি ইতিমধ্যে আশ্রয়শিবির ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপন করেছেন।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার শেষের পাতায় ‘আরসার আতঙ্কে রোহিঙ্গা মাঝিরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-