‘ছেলেপেলে বাকি খেয়ে টাকাপয়সা দিচ্ছে না। প্রায় আড়াই লাখ টাকা বাকি পড়ে গেছে। এখন ক্যাশপাতি নাই, একেবারে শেষ হয়ে গেছে। বাজার করার টাকা নাই। যে দোকান থেকে বাকিতে জিনিস কিনতাম, তারা আর বাকি দিচ্ছে না। এ জন্য দোকান বন্ধ করে দিয়েছি। ছাত্রলীগের ছেলেপেলে দুই মাস ধরে কমিটি কমিটি করে ম্যালা টাকা বাকি রেখেছে। অন্য শিক্ষার্থীরাও খালি বাকি খায়।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সামনে একটি খাবারের দোকান চালান মো. মানিক হোসেন ওরফে বাবু (৩৩)। শিক্ষার্থীরা তাঁকে ‘বাবু ভাই’ বলে ডাকেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর খাবারের দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছেন। হঠাৎ করে দোকান বন্ধের কারণ জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।
❝আমার তো কোনো নগদ ক্যাশ নাই। খাবার বিক্রি করে যা আসে, তা–ই দিয়ে আবার জিনিসপত্র কিনতে হয়। এভাবে ঋণ হয়ে গেছে প্রায় তিন লাখ টাকা। এখন তাঁরাও টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। খুব বিপদে আছি।❞
২০০০ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে খাবারের দোকান চালান ‘বাবু ভাই’। অন্তত পাঁচটি হলের শিক্ষার্থীরা হলের ডাইনিং-ক্যানটিনের বাইরে মানিকের দোকানে খেয়ে থাকেন। মানিকের বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মেহেরচণ্ডী এলাকায়। তাঁর দোকানে ১০ থেকে ১২ জন কাজ করতেন। দোকান বন্ধ হওয়ায় তাঁরাও কাজ হারিয়েছেন।
মানিক বললেন, ‘দুই মাস ধরে (ছাত্রলীগের) কমিটি কমিটি করে শুধু খেয়েছে। আর বলেছে, কমিটির পরে দেব। ১২ নভেম্বর কমিটি হয়নি। এই করে করে ম্যালা টাকা বাঁইধা গেছে। আমারও বাজার করার টাকা নাই। প্রায় আড়াই লাখ টাকা পাব আমি। খাতাতে সবার নাম লেখা আছে। দু-একজন কিছু কিছু দিচ্ছে, আবার বাকি খাচ্ছে। কিছু বলতেও পারি না। এখন তো আমার ক্যাশপাতি একেবারে শ্যাষ। যে দোকান থেকে বাকিতে জিনিস কিনতাম, তারা আর বাকি দিচ্ছে না। ওখানে আমারও ম্যালা টাকা বাইড়া গেছে।’
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-