গিয়াস উদ্দিন ভুলু, কক্সবাজার জার্নাল •
টেকনাফে মাদকের টাকার লেন-দেন কেন্দ্র করে। লক্ষীপুরের এক যুবককে কৌশলে ডেকে এনে মোটা অংকের টাকা আদায় করার পর বেধড়ক পিটিয়ে খুন করেছে মাদক কারবারে জড়িত অপরাধীরা।
খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট তৈরী মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
৯ ডিসেম্বর(শুক্রবার) সন্ধ্যা ৭ টারদিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মরিচ্যাঘোনা বড়বিল এলাকা সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় মাদক পাচারে জড়িত স্থানীয় একদল স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী,
লোহার রড এবং হাতুড়ি পেটা করে উক্ত যুবককে খুন করে।
নিহত যুবক হচ্ছে, লক্ষীপুর জেলার অন্তর্গত চন্দ্রগঞ্জ থানার পালবাড়ি এলাকার হাসিবুর রহমান’র পুত্র হুমায়ূন রশিদ ওরফে সুমন (৩৬)।
উক্ত ঘটনায় একই এলাকার এঞ্জু মিয়ার পুত্র জহিরুল ইসলাম (৩৭) নামে এক যুবককেও গুরুতর আহত করে। এরপর স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে থানা পুলিশকে অবহিত করে।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, খবরটি পাওয়ার সাথে সাথে এসআই অলি আহমদ’র নেতৃত্বে পুলিশের একটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মৃত এবং আহত দুই যুবককে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত আহত যুবক জহিরুল ইসলাম জানান, কারাগারে থাকা অবস্থায় উভয়ের মধ্যে পরিচয় হয়। কারামুক্তির পর তারা একে-অপরের সাথে যোগাযোগ করে।
নিহত হুমায়ূনের কথামত টেকনাফের হ্নীলা মরিচ্যাঘোনা এলাকার মৃত ফজলুল হক’র পুত্র ফয়সাল, জাফর হোসেন’র পুত্র রাসেল ও নুরুল আলমের পুত্র ইব্রাহীমদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। বেড়াতে আসার পর জানতে পারি ফায়সাল, রাসেল ও ইব্রাহীম সিন্ডিকেটের সাথে মাদক কারবারের অবৈধ লেন-দেন রয়েছে। নিহত হুমায়ূন তাদের ৩ লাখের অধিক টাকা নগদ পরিশোধ করে।
তারপরও মাদক কারবারী গংদের সদস্যরা বেধড়ক পিটুনিতে হুমায়ুনকে মেরে ফেলে এবং আমাকে গুরুতর আহত করে।
নিহতের স্ত্রী শাহেনা আক্তার মিথিলা সংবাদ কর্মীদের জানান,আমার স্বামী আর জহিরুল সিলেট হয়ে টেকনাফে গেছে বলে শুনেছি। সাথে ৩ লাখ টাকা নিয়ে গেছেন বলে জেনেছি। ইব্রাহীমরা আমাকে বারবার ফোনে বলেছিল,টাকা না দিলে তোমার স্বামীকে মেরে ফেলবো বলে হুমকি দিয়েছিল। আসলেই খুন করেই ফেলল সেটা আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা। এখন আমি ৩মাসের একটা বাচ্চা নিয়ে কোথায় যায়। আমার স্বামীর খুনীদের কঠোর শাস্তি দাবী করছি।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার বশির আহমদ জানান, আমার নির্বাচনী এলাকার মরিচ্যাঘোনা অংশটি পাহাড়ি জনপদ। বিভিন্ন প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা বেশ কয়েকটি স্বশস্ত্র গ্রæপ মাদক চোরাচালান, অপহরণ ও মুক্তিপণ বাণিজ্যে জড়িত। এসব স্বশস্ত্র গ্রæপের উৎপাতে সাধারণ মানুষ অসহায়। আইন-শৃংখলা বাহিনীর আন্তরিক সহায়তা পেলে আমি ২/৩মাসের মধ্যে এসব অপরাধীদের দমন করতে সক্ষম হব বলে আশা প্রকাশ করছি।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হালিম আরও বলেন মৃতদেহটি ময়না তদন্ত রিপোর্ট তৈরী করার জন্য কক্সবাজার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতাই নিয়ে আসার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-