পুলিশকে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়তে চায় সরকার

কক্সবাজার জার্নাল ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশ পুলিশকে সাইবার ক্রাইম, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন, মানি লন্ডারিং ইত্যাদি সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম একটি জনবান্ধব আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সব ধরনের সময়োপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

শনিবার (১২ নভেম্বর) ‘নৌ পুলিশের ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌ পুলিশের ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি নৌ পুলিশের সব সদস্যকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কালজয়ী আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের দেশপ্রেমিক পুলিশ সদস্যরা। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব বীর পুলিশ সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন আমি তাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৩ বছরে পুলিশ বাহিনীতে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট, সাইবার ইউনিট, নৌ পুলিশ গঠনসহ ছয়টি বিশেষায়িত ইউনিট, চারটি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, তিনটি র্যাব ব্যাটালিয়ন, দুটি রেঞ্জ, দুটি মেট্রোপলিটন পুলিশ, ৬৩টি থানা, ৯৫টি তদন্ত কেন্দ্র এবং ৩০টি ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার গঠন করা হয়েছে। একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ দেশ গড়ার লক্ষ্যে পুলিশের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করতে জনবল ও বাজেট বৃদ্ধিসহ সার্বিক সক্ষমতা বাড়াতে পুলিশের প্রায় সব ইউনিটের কাঠামো সংস্কারসহ মোট ১ হাজার ৫২৯টি ক্যাডার পদসহ সর্বমোট ৮২ হাজার ৯২৭টি পদ সৃজন করা হয়।

সরকারপ্রধান বলেন, বিশ্বায়ন ও ডিজিটালাইজেশনের এ যুগে অপরাধীরা সহজলভ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও সর্বদা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে অপরাধকে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক পরিসরে দ্রুত বিস্তৃত করছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক এবং স্থানীয় প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ প্রতিরোধ ও অপরাধ উদ্ঘাটন এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এ যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য পুলিশ কার্যক্রমের প্রতিটি পর্যায়কে ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালে নৌ পুলিশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে সীমাবদ্ধ অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার মধ্য দিয়েই এ ইউনিট পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বর্তমানে নৌ পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নৌ পথের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সাধন করার পাশাপাশি নদীতে বিদ্যমান জাতীয় সম্পদ মা ইলিশ, জাটকাসহ অন্যান্য জলজ সম্পদ সংরক্ষণ, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং নদীদূষণ প্রতিরোধ ও নাব্য রক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমি আশা করি, আধুনিক প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান লাভের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতার উন্নতিসাধন করে সেবা প্রদানের দৃঢ় মনোবল নিয়ে নৌ পুলিশ জনসাধারণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হবে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, নৌ পুলিশের প্রত্যেক সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা, নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অবদান রাখবে- এ প্রত্যাশা করি।
জাগোনিউজ২৪

আরও খবর