প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যে থাকবে কক্সবাজার সৈকত, অবৈধ স্থাপনা আর নয় : হাইকোর্ট

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার পাশাপাশি অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে জারি করা আদালত অবমাননার রুলের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ গতকাল বুধবার এই আদেশ দেয়। আদালতে রিট আবেদনকারী হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রিপন বাড়ৈ এবং সঞ্জয় মণ্ডল।

বিবাদীপক্ষে মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির শুনানি করেন। শুনানির পর আদালত আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে পাঁচ বিবাদীকে অব্যাহতি দেয়।

তারা হলেন- কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফোরকান আহমদ, উপ-নগর পরিকল্পনাবিদ মো. তানভীর হাসান রেজাউল, কঙবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ, জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসানুজ্জামান এবং কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান। খবর বিডিনিউজের।

আদালত তাদের অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সৈকতের বৈশিষ্ট্য রক্ষায় হাই কোর্টের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে সব সময় সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে আর কেউ সৈকত দখল বা স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে, সে ব্যাপারেও তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়।

মনজিল মোরসেদ শুনানিতে বলেন, আদালতের নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণে সৈকত এলাকা বারবার অবৈধ দখলের শিকার হয়, যা পর্যটকদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। আমাদেরকে বারবার উচ্ছেদের আবেদন নিয়ে আদালতে আসতে হয়। ভবিষ্যতে একই ধরনের অবৈধ দখল ও স্থাপনা যাতে সৈকতে না হতে পারে, সে বিষয়ে তিনি আদালতের কাছে নির্দেশনা চান।

এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সৈকত অবৈধভাবে দোকান বসানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উকিল নোটিস পাঠান হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) সভাপতি আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ২০১১ সালে হাই কোর্টের দেওয়া এক রায়ে সমুদ্র সৈকতে অবৈধ দখল উচ্ছেদের নির্দেশনার কথা বলা হয় ওই নোটিসে। এইচআরপিবির প্রতিনিধি সমুদ্র সৈকত এলাকায় পর্যবেক্ষণে গেলে সৈকত এলাকায় অনেক অবৈধ দখল ও স্থাপনা দেখতে পান জানিয়ে নোটিসে বলা হয়, আদালতের নির্দেশে সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল।

বর্তমানে ওইসব স্থাপনা ভাড়া দিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা আয় করছে, কিন্তু প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা আদালত অবমাননার সামিল। উকিল নোটিস পাঠিয়ে সাড়া না পেয়ে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী হাই কোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেন ৫ জনের বিরুদ্ধে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ মার্চ আদালত অবমাননার রুল জারি হয়। অগাস্টে সশরীরে তলব করা হয় জেলা প্রশাসককে। পরে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন অগ্রগতি জানিয়ে ৯ নভেম্বর প্রতিবেদন দেন জেলা প্রশাসক। সেখানে বলা হয়, সৈকতের বালিয়াড়িতে ২৬০ এবং সুগন্ধা পয়েন্টে ৪১৭টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

আরও খবর