ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা রোহিঙ্গা যুবকের

ডেস্ক রিপোর্ট •

কক্সবাজারে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ‘ইউএনএইচসিআর’র অফিসের সামনে সড়কের ওপর শুয়ে এক রোহিঙ্গা যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। এ সময় মা-স্ত্রী ও সন্তানসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য ছিলেন।

পরে ‘ইউএনএইচসিআর’র কর্মকর্তা, নিরাপত্তারক্ষী গণমাধ্যম কর্মী ও টহল পুলিশ আধঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ওই যুবককে বুঝিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়।

জানা যায়, ক্যাম্প সিআইসি, পুলিশ ও পারিবারিক বিরোধের বঞ্চনার বিচার চাইতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) কক্সবাজার সাব অফিসে আসেন রোহিঙ্গা যুবক আবুল ওসমান। তখন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে ওই যুবক সড়কে শুয়ে পড়েন। তিনি সপরিবারের আত্মহত্যার হুমকি দেন।

বুধবার রাত ৮টার দিকে কক্সবাজার শহরের মোটেল রোডে ‘ইউএনএইচসিআর’র অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ওই যুবক উখিয়ার কুতুপালং নিবন্ধিত শরণার্থীশিবিরের ই-ব্লকের ৪০ নম্বর শেডের বাসিন্দা এহসানুল হকের ছেলে। সঙ্গে ছিল তার স্ত্রী, সন্তান, ভাই ও মা ফাতেমা বেগম।

আবুল ওসমান বলেন, পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে ক্যাম্প সিআইসি ও পুলিশ হয়রানি করছে নিয়মিত। পাশাপাশি রেশন নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে যে সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তার কিছুই দেওয়া হচ্ছে না।

তারপরও বিচার চাইতে ‘ইউএনএইচসিআর’র সাব অফিসে আসি। কর্মকর্তারা বারবার আশ্বস্ত করে। কিন্তু কোনো সমাধান দেয় না। এভাবে তাদের অবহেলার কারণে প্রতিদিন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

‘ইউএনএইচসিআর’সহ ক্যাম্পে নিয়োজিত এনজিওর চাকরির করার কারণে কথিত আরসার নেতাদের হুমকি পেতে হচ্ছে জানিয়ে এ যুবক জানান, ৩২ বছর ধরে তারা আমাদের (ইউএনএইচসিআর) নিয়ে ব্যবসা করছে। নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা থাকলেও তারা কিছু করছে না। আমি বারবার অভিযোগ করার পরও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। আমি এখন সপরিবারের আত্মহত্যা করব।

আত্মহত্যা চেষ্টাকারী যুবকের মা ফাতেমা বেগম বলেন, ওসমানের বাবা আরেকটি বিয়ে করে। ওই নারী আমার সন্তানদের হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিক বার হামলা করে লোকজন নিয়ে। এ নিয়ে বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখন পুরো পরিবার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছি। উল্টো তারা আমার ছেলেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হেনস্তা করছে। ইউএনএইচসিআর অফিসে কয়েক দফা বলার পরও সমাধান হচ্ছে না বা করছে না তারা। এখন কোথায় যাব?

ইউএনএইচসিআর’র কার্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিন বলেন, সিনিয়র স্যারদের সঙ্গে কথা বলে তারা বের হন। একপর্যায়ে ওই যুবক সড়কে শুয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ পর আমরা তাকে বুঝিয়ে একটি ইজিবাইকে তুলে দিয়েছি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার কার্যালয়ের লিয়াজোঁ অফিসার ইফতিয়ার উদ্দিন বায়েজীদ বলেন, নিবন্ধিত রোহিঙ্গা পরিবার বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। কথা বলার একপর্যায়ে তিনি অফিসের সামনের সড়কে বেরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে বুঝিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

আরও খবর