যুগান্তর •
কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ডজনের বেশি ইয়াবা কারবারি, তালিকাভুক্ত হুন্ডি কারবারি এবং বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের এক ঝাঁক নেতাকর্মী স্থান পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
৮ সেপ্টেম্বর টেকনাফ পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান বদি (সাবেক এমপি) ও সাধারণ সম্পাদক আলম বাহাদুর ৬৭ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেন। যদিও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বদির বিতর্কিত কমিটি এখনো অনুমোদন পায়নি।
১৯ জুলাই পৌরসভা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে সম্মেলন বয়কট করেন উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী। এর পরই তড়িঘড়ি করে ৮ সেপ্টেম্বর এ পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
জানা যায়, কমিটিতে স্থান পাওয়া বদির ভাই আব্দুস শুকুর, কাউন্সিলর রেজাউল করিম মানিক, আব্দুল আমিন ও জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ইয়াবার মামলা আছে। এদের মধ্যে আব্দুল আমিন ও আব্দুস শুকুর আত্মস্বীকৃত মাদক কারবারি। এ ছাড়াও মো. ফারুক, কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান, উসমান, আব্দুস সামাদ ওরফে লালু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত হুন্ডি কারবারি। আর কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান দুদকের মামলার আসামি।
এ ছাড়াও নূর হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, নুরুল আলম, সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ ও কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান বিএনপির নেতাকর্মী। তারা বিএনপির বিভিন্ন কমিটির সদস্য ছিলেন। কমিটিতে স্থান পাওয়া আবুল কালাম ছাত্রসমাজের সাবেক নেতা। তারা আওয়ামী লীগের ন্যূনতম প্রাথমিক সদস্যপদ নেওয়া ছাড়াই সরাসরি পৌর কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। অভিযোগ আছে, প্রত্যেকেই সাবেক এমপি বদির ঘনিষ্ঠজন। এ কারণেই তাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। টেকনাফ আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ, আবদুর রহমান বদি তার ঘনিষ্ঠ ও মাদক কারবারিদের আওয়ামী লীগ নেতা বানানোর নতুন মিশনে নেমেছেন।
এ বিষয়ে জানতে আবদুর রহমান বদির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। কথা বলতে রাজি হননি পৌর কমিটির দায়িত্বশীল নেতারাও। তবে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) জাহেদ হোসেন বলেন, টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলেও সেটি এখনো অনুমোদন পায়নি।
গঠনতন্ত্রবহির্ভূত বিতর্কিত সম্মেলন ও মাদক কারবারি নিয়ে কমিটি গঠন করায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোন কেটে দেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-