‘দিনে দিনে যেভাবে রোহিঙ্গাদের দাপট বাড়ছে তাতে আমরা স্থানীয়রা কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছি। সন্ধ্যা নামতেই আতঙ্ক ভর করে আমাদের। এদিকে রাত বাড়তে থাকলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো হয়ে ওঠে অপরাধের অভয়ারণ্য। রাতের শেষে সকালে ক্যাম্পগুলোতে এখন প্রায়ই শোনা যায় অস্ত্রের ঝনঝনানি।
মাদক ব্যবসা, অপহরণ, ধর্ষণ, মারামারি এবং বিশৃঙ্খলা নিত্যদিনের ঘটনা। ইদানীং ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে প্রায়ই গোলাগুলি এবং খুনোখুনির ঘটনা ঘটছে’ কক্সবাজারের উখিয়া বাজারের একটি খাবার হোটেলে স্থানীয় রহিম উদ্দিন সম্প্রতি দেশ রূপান্তরের কাছে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আঞ্চলিক ভাষায় নিজেদের আতঙ্কের কথা এভাবেই প্রকাশ করেন।
এ সময় এলাকার আরও কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, রোহিঙ্গারা যদি এভাবে এখানে আরও কয়েক বছর থাকে তাহলে স্থানীয়দের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। কারণ কক্সবাজার, টেকনাফ ও উখিয়ার মাদক ও চোরাকারবারিরা অনেকেই মাদক, ইয়াবা ও মানব পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে রোহিঙ্গাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে।
রহিম উদ্দিন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের হাতে যেভাবে কাঁচা টাকা আসছে এতে তারা ক্যাম্পের বাইরে বাংলাদেশিদের সহযোগিতা নিয়ে জমিজমা কিনে ঘরবাড়ি করছে। কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলেও তারা অনেকেই অংশীদার, এটাও সবাই জানে। দিনে দিনে তারা আমাদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। বাংলাদেশি নাগরিক পরিচয় পাচ্ছে। তারা জাতীয় পরিচয়পত্র বানাচ্ছে।
বিদেশ পাড়ি দিচ্ছে। এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে চাঁদাবাজি ও অপহরণের ঘটনা। আবার রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলোতেও (বেসরকারি সংস্থা) তারা কাজ করছে। সেখানে স্থানীয়দের চাকরিতে নিচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের সন্তানরা নাম-পরিচয় গোপন রেখে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়ালেখা করছে। ’
টেকনাফের বাসিন্দা হারুন শেখ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কারণে আমরা নিরাপত্তার হুমকিতে রয়েছি। তাদের কারণে এখানে কোনো স্বাভাবিক জীবন নেই। পদে পদে আমরা চেকিংয়ে পড়ছি। আর তাদের সঙ্গে যুক্ত আছে মাদক কারবারিরা। তারা ইয়াবা ও মাদক পাচার করে। আমাদের সন্তানদের নিয়ে আমরা একটা ভয়ংকর পরিস্থিতিতে থাকি। ছেলেপেলের সামনে সারাক্ষণ যদি অবৈধ কাজের টোপ থাকে তাহলে আমরা কতটা নিরাপদ থাকি। আর তাদের কাছে আছে অস্ত্র। কখন কাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়! এটা একটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ’
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, রোহিঙ্গাদের দ্রুত তাদের দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। না হয় তাদের এখান থেকে দূরে কোথাও নিয়ে যেতে হবে। না হলে পুরো কক্সবাজার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে।
স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিন যত যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা ততই বাড়ছে। এর মধ্যে ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিসহ (আরসা) অন্তত সাত-আটটি গ্রুপ সক্রিয়। এতে মিয়ানমারের ইন্ধনও রয়েছে। মিয়ানমার থেকে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সহযোগিতাও করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তরুণ প্রজন্মের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের সামনে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। তাই তারা অর্থ উপার্জন এবং বিভিন্ন অপরাধে ঝুঁকে পড়ছে। দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার। না হলে তাদের ভাসানচর বা অন্য কোনো জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে। তাদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। অবাধে যেন তারা স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে যেতে না পারে সে ব্যাপারে কড়াকড়ি করতে হবে। প্রয়োজনে ক্যাম্পে শক্ত বেড়া দিতে হবে। না হয় দেশের সবচেয়ে বড় পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজার এবং আশপাশের এলাকাগুলো নিরাপত্তার হুমকিতে পড়বে।
এদিকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে আসা জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। তিনি গত মঙ্গলবার কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। পরদিন বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে ও একটি আলোচনা সভায় তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন স্বেচ্ছায় ও সঠিক পন্থায় না হলে তারা আবারও ফেরত চলে আসবে। মিশেল মনে করেন, এখনো রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, ‘রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে চায়, তবে এটি হতে হবে স্বেচ্ছায় ও নিরাপদ পরিবেশে। কিন্তু সত্য হচ্ছে, সেখানে তাদের ফেরত যাওয়ার পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। আমরা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে আসছি। ’
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে মিশেল ব্যাচেলেট আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে সে প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ আছে। এছাড়া মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি খুবই সংকটপূর্ণ। সেখানে বেশ অস্থিরতা বিরাজ করছে, অনেক সংঘাত চলছে। রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আপনি যদি প্রত্যাবাসনের কথা চিন্তা করেন, তবে সেটি হতে হবে সঠিক পন্থায়। তা না হলে রোহিঙ্গারা আবারও ফেরত চলে আসবে। ’
এদিকে গত ৪ আগস্ট উখিয়ার মধুরছড়া ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদল দুর্বৃত্তের হামলায় হেডমাঝিসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। ওইদিন রাত ৮টার দিকে ওই ক্যাম্পের এফ-১৩ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন ওই ক্যাম্পের হেডমাঝি মোহাম্মদ হোসেন (৫০), একই ক্যাম্পের বাসিন্দা পেঠান আলী (৪০) ও নুর হোসেন (৩৮)। বাকি একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক নাঈমুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় হামলা চালিয়ে ক্যাম্প-৪-এর হেডমাঝিসহ চারজনকে গুলিবিদ্ধ করে দুর্বৃত্তরা। ’

কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৯৯টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি, রোহিঙ্গারা খুনোখুনি, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, মানব পাচার, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এবং ধর্ষণসহ অন্ততপক্ষে ১৪ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এসব অপরাধের অভিযোগে ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত থানায় ১ হাজার ৯০৮টি মামলা হয়েছে। ’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়ার ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে শুরু করে। তিনি আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান ছিলেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন মুহিবুল্লাহ। সেদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়ার লাম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদল দুর্বৃত্ত তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সক্রিয় একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। বিষয়টি মুহিবুল্লাহ তার ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছিলেন। এ ঘটনার পর থেকে তার পরিবারের সদস্যরা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসাকে দায়ী করে আসছে। এরপর গত ২২ অক্টোবর ১৮ নম্বর ক্যাম্পের একটি মাদ্রাসায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে গুলি করে ছয় ছাত্র-শিক্ষককে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, গত আড়াই মাসে আরসার দুই নেতাসহ অন্তত পাঁচজন খুন হয়েছে। গত ১ আগস্ট বিকেলে মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নুরুল আমিন (২৬) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক খুন হন। ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনের ‘আই’ ব্লকে এ হত্যাকাণ্ড হয়। নিহত নুরুল ওই ক্যাম্পের আবু শামার ছেলে। ১৪ এপিবিএনের অতিরিক্ত ডিআইজি সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। ’
এছাড়া গত ২২ জুন আরসা নেতা মোহাম্মদ শাহ এবং এর আগে ১৫ জুন একই গ্রুপের সদস্য মো. সেলিম (৩০) সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। ১০ জুন কুতুপালংয়ের ৪ নম্বর ক্যাম্পের স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ সমিন (৩০) এবং ৯ জুন রোহিঙ্গা নেতা আজিম উদ্দিনকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মে মাসে খুন হন রোহিঙ্গা নেতা সানাউল্লাহ (৪০) ও সোনা আলী (৪৬) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক। এর এক সপ্তাহের ব্যবধানে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড শীর্ষ সন্ত্রাসী হাসিমের সহযোগী মো. শাহকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. নাঈমুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে আরসা সদস্যরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ’
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হুমায়ুন কবীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এতগুলো লোক এত অল্প জায়গায় থাকলে এমনিতেই সমস্যা হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তরুণদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা লেখাপড়া করছে না, কাজকর্ম নেই। যার কারণে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সুযোগে ক্যাম্পে বিভিন্ন মাদকও ঢুকছে। এর ফলেই সংঘাত হচ্ছে। রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ সংগঠক ছিলেন। ক্যাম্পে তার বিপক্ষের লোক ছিল যারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল, যা কাম্য নয়। ক্যাম্পে জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যায় ততই আমাদের জন্য মঙ্গলজনক। ’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা তরুণরা যাতে হতাশাগ্রস্ত না হয় সেজন্য সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প এমনিতেই সংঘাতের একটা জায়গা হয়ে আছে। এখন আমরা যতটুকু পারছি কৌশলে তা নিয়ন্ত্রণ করে কমিয়ে আনা যায় সেই চেষ্টা করছি। কিন্তু দীর্ঘদিন রোহিঙ্গারা এখানে থাকলে কক্সবাজারসহ পুরো পার্বত্য এলাকা হুমকির মুখে পড়বে। অবশ্যই এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। না হয় একসময় স্থানীয়রা সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। জায়গাটি অপরাধের অভয়ারণ্য হয়ে পড়বে। ’
রোহিঙ্গা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গারা শরণার্থী নয়, এরা মূলত বাস্তুচ্যুত। তারা জানে তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা যেমন কম তেমনই বাংলাদেশেও তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তাই নিজেদের লাভের জন্য তারা নানান অপকর্মে জড়াচ্ছে। কেউ মাদক ব্যবসা করছে, কেউ অস্ত্র পাচার আবার কেউ মানব পাচারে লিপ্ত। তারা আসলে তাদের অর্থনৈতিক আখের গোছাতে অপরাধে জড়াচ্ছে। বাংলাদেশের অনেকেও তাদের সাহায্য করেছে। নইলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র ঢুকে কীভাবে, মাদক ঢুকে কীভাবে, মানব পাচার হয় কীভাবে? তাই এসব রোধে আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে। নইলে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে বিশৃঙ্খল রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ’

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও কূটনৈতিক বিশ্লেষক ওয়ালি উর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিকল্প আসলে নেই। তবে এখন যত বেশিসংখ্যককে ভাসানচরে পাঠানো যায় তত ভালো। আর তাদের কঠোর নজরদারিতে রাখতে হবে। তারা যদি স্থানীয়দের জন্য হুমকি হয়, পরে তারা বড় বড় অপরাধ ঘটাবে। ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আমরা সবার সহযোগিতা চেয়েছি। আমাদের পক্ষে বাস্তুচ্যুত এত বড় জনগোষ্ঠীকে দীর্ঘ সময় জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যাবাসনে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। ’
সরকারি হিসাবে কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরসহ অন্তত ১৩ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তাদের আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার সহায়তায় খাবারসহ মানবিক সেবা দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল চার লাখ। গত কয়েক বছরে এ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩ লাখের মতো।
সুত্র: দেশ রুপান্তর
(এ প্রতিবেদনটি তৈরি করতে সহযোগিতা করেছেন উখিয়া প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম)
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-