কক্সবাজার জার্নাল ডেস্ক:
যশোরের চৌগাছা উপজেলার দেবীপুর গ্রামের বিপ্লব হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাননি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। খুন করে সড়ক দুর্ঘটনা বলে প্রচার চালান নিহত বিপ্লব হোসেনের চাচাতো ভাই ও অনুসারীরা। তারাই মিথ্যা তথ্য দিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিয়ে দাফন করেন। পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও এলাকার মানুষের আলোচনায় হত্যার বিষয়টি সামনে এসেছে।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে যশোর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন মামলার বাদী ও নিহত ব্যক্তির স্ত্রী নাসরিন আক্তার।
গত ১ মার্চ গুরুতর আহত অবস্থায় বিপ্লব হোসেনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা হয়। পরে এ ঘটনাকে ‘হত্যাকাণ্ড’ দাবি করে ১৬ মে যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঁচজনের নামে মামলা করেন বিপ্লব হোসেনের স্ত্রী নাসরিন আক্তার।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আদালতে মামলা করায় আসামিরা বাদী ও তার সন্তানদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
আসামিরা হলেন চৌগাছা উপজেলার দেবীপুর গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে আরিফ হোসেন, আলামিন ও আরশাদ আলী, রমজান মালিথার ছেলে আরিফুল ইসলাম ও নিয়ামতপুর গ্রামের বুদোর ছেলে বিপুল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাসরিন আক্তার বলেন, বাড়িতে একটি কুকুরের বাচ্চা আসা নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আসামিদের সঙ্গে তার স্বামী বিপ্লব হোসেনের বিরোধ হয়। এনিয়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। বিষয়টি আসামিরা মেনে নিতে পারেননি। তারা বিপ্লব হোসেনকে খুন-জখমের ষড়যন্ত্র করতে থাকেন। গত ১ মার্চ সন্ধ্যায় বিপ্লব হোসেন মোটরসাইকেলে করে তার খালু শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন।
পথে মুক্তদহ গ্রামের মোড়ে (চৌগাছা-কোটচাঁদপুর সড়ক) আসামিরা বিপ্লবের গতিরোধ ও মারপিট করে গুরুতর জখম করেন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় আসামিরা প্রভাবিত করে থানায় অভিযোগ দিতে বাধা দেন। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা হয়।
নাসরিন আক্তার আরও বলেন, পরে খোঁজখবর নিয়ে ও ঘটনার সময় উপস্থিত সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হই। পরে গত ১৬ মে আদালতে মামলা করি। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে এ ব্যাপারে চৌগাছা থানায় আর কোনো মামলা হয়েছে কি না তা প্রতিবেদন আকারে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে জানানোর নির্দেশ দেন। এরপর ৩১ মে আদালত যশোর পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
আদালতে মামলা করায় আসামিরা তার ও তার সন্তানদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন নাসরিন আক্তার।
তিনি বলেন, ‘হুমকির ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। আমরা চরম আতংকে আছি। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই। প্রয়োজনে আমার স্বামীর লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন। ভিকটিমের মরদেহ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত বিপ্লবের মা সাবিরন বেগম, ভাই রুবেল হোসেন, মেয়ে সাবিনা আক্তার বিপাশা, খালু শ্বশুর রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
জাগোনিউজ২৪
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-