ডেস্ক রিপোর্ট •
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান বিভিন্ন সময়ে জমির মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর স্বীকারোক্তিতে ঘুষের টাকা কে কত ভাগ পেত তাও উল্লেখ করেছেন।
গত ১ জুলাই জব্দ ২৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকাও ঘুষের বলে তিনি আদালতে স্বীকার করেন। এই টাকা তিনি মহেশখালীর ৪০ জন জমির মালিককে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সময় জোর করে আদায় করেছেন বলে সংশ্নিষ্টরা জানান।
বুধবার বিকেলে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল মনসুর সিদ্দিকীর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন আতিকুর। গত ১৮ জুলাই তাঁকে জেলা কারাগার থেকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কর্মকর্তা। দুই দিনের মাথায় তিনি ঘুষ গ্রহণের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন।
জবানবন্দিতে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে জমির মালিকদের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের ২৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা নিয়ে গত ১ জুলাই কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে ঢাকা যাচ্ছিলেন। এই টাকা দিয়ে তার জমি কেনার কথা ছিল। বিমানবন্দরে স্ক্যানারে টাকাগুলো ধরা পড়ে। তখন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজকে অবহিত করেন।
পরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে ফেরত পাঠালে সেখানে তাঁকে সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
গত ৪ জুলাই আতিকুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন। কক্সবাজার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মহেশখালীর ধলঘাটা ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনসহ প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন আতিকুরসহ তিন সার্ভেয়ার।
আতিকুরকে গ্রেপ্তারের ঘটনার পর কক্সবাজারের সব সার্ভেয়ারকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কয়েক সার্ভেয়ারের বাসায় অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ৯৩ লাখ টাকা ও বেশ কিছু দাপ্তরিক কাগজপত্র জব্দ করেছিল। এ ঘটনার পর ৩৪ জন সার্ভেয়ারকে একযোগে বদলি করা হয়েছিল।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-