গিয়াস উদ্দিন ভুলু, কক্সবাজার জার্নাল •
টেকনাফে ডেঙ্গু ও করোনা সংক্রমনের হার দিন দিন বেড়েই চলছে।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, গত ৬ দিনে অত্র উপজেলায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৩০ জন এবং ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত ৫৬ জন।
রোগীদের অনেকে ঈদ মৌসুম হওয়ায় নিজ বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত রোগিদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসকরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালে আসা চলতি বছরের জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত ২২৮ জনের মধ্যে ১১২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে জুন মাসে ৬৫ এবং জুলাইয়ের পাঁচ দিনে ৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। যা মোট রোগীর ৪৯.১২ শতাংশ। অপরদিকে, একইসঙ্গে করোনায় আক্রান্তদের সংখ্যাও বাড়ছে। গত ছয় দিনে উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ জন। গত জুন মাসে করোনা সনাক্তের সংখ্যা ছিল ১৪ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসকরা বলছেন,
দুটি রোগের জন্যই মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। হঠাৎ করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় টেকনাফ উপজেলা করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে জনসচেতনতা বাড়াতে মাস্ক ও প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়সার খসরু বলেন, ‘ইতোমধ্যে উপজেলায় করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে ৫৬ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়াতে মাস্ক ও প্রচারপত্র বিতরণ করেছি আমরা।
বিশেষ করে বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট পরিষ্কারের কার্যক্রম চলছে।’
টেকনাফের হ্নীলা মৌলভীবাজার এলাকার বাসিন্দা নুরুল হাসান তার তিন বছরের ছেলে মো. রহিমকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু কর্নারে ভর্তি করেছেন।
মো. রফিক বলেন, ‘হঠাৎ ছেলের জ্বর ও সর্দি-কাশি দেখা যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এখানে অনেক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল বলেন, ডেঙ্গু ও করোনার প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহে ৫৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কক্সবাজারে পাঠিয়েছি। সেখানে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত বেশিরভাগই পৌরসভার বাসিন্দা। ডেঙ্গুর পাশাপাশি উপজেলায় করোনার হারও বাড়ছে।’
তিনি বলেন, পরিবেশ ও অবস্থানগত কারণে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বর্ষাকালে রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা ও প্যালাস্টিক বর্জ্যে পানি জমে থাকে। এসব থেকে এডিস মশার প্রজনন হচ্ছে। ফলে ডেঙ্গু প্রতিরোধে যত্রতত্র প্লাস্টিকের বর্জ্য না ফেলা, ঘরের আশপাশ পরিষ্কার রাখা, দিনে এবং রাতে মশারি টানিয়ে রাখতে হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-