স্থানীয়দের অধিকার আদায়ে জনপ্রতিনিধিদের এক হওয়ার আহবান

কক্সবাজার জার্নাল রিপোর্ট •

স্থানীয়দের অধিকার আদায়ে কতিপয় জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতার বিষয়ে উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা আসার পর থেকে স্থানীয়রা নানা সমস্যায় জর্জরিত এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দিয়েছিলেন রোহিঙ্গাদের জন্য যে সহায়তা বা বরাদ্দ আসবে তার ২৫% স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দেয়া হবে কিন্তু দুঃখজনক বিষয় গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয়দের যে অধিকার তা তারা পাচ্ছেনা এবং স্থানীয়দের জন্য দেয়া বরাদ্দ উখিয়া-টেকনাফ ছাড়িয়ে কক্সবাজার জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। এনজিওরা উখিয়ার জন্য যে কাজ করার কথা সে কাজ তারা করছেনা বরং কাজ করছে অন্য উপজেলায়।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে খুব বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উখিয়া-টেকনাফের মানুষ, পক্ষান্তরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য আসা বরাদ্দ কেনো অন্য উপজেলায় যাবে।

তিনি বলেন, আজ উখিয়ার জন্য ভাবার মানুষ নেই বলেই আমরা সবকিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমাদের জন্য আসা বরাদ্দ যাচ্ছে বিভিন্ন উপজেলায়। অথচ তারা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না।
আসন্ন কোরবানি ঈদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত কোরবানি ঈদে উখিয়ার মানুষ কোনো গরু পায়নি। কিন্তু গত বছর রোহিঙ্গা শিবিরে কর্মরত নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত এনজিও মিলে ৫০ হাজারের অধিক গরু রোহিঙ্গা শিবিরে বিতরণ করেছে এবং হোষ্ট কমিউনিটির নামে প্রায় ২০ হাজার গরু কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গেছে।

যার মধ্যে কক্সবাজার পৌরসভায় প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ১০-১২টি করে গরু পেয়েছে। পাশাপাশি রামু, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালীর প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে গরু পেয়েছে কিন্তু আমরা পায়নি। এমনকি আমার কাছে তথ্য আছে কক্সবাজারের বাইরেও হোষ্ট কমিউনিটির জন্য বরাদ্দের গরু চলে গেছে।

তিনি বলেন, উখিয়ার মানুষের কথা বলার জন্য যোগ্য একজন নেতৃত্বের অভাব পড়েছে। কেউ এখন আর উখিয়া নিয়ে ভাবেনা। আমাদের যে জনপ্রতিনিধি, সুশিল সমাজের নেতারা আছেন তারা কেউ-ই উখিয়ার কথা বলতে চাননা। এর পেছনের কারণ হতে পারে হয়তো তারা তাদের কাছে জিম্মি নয়তো অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে।

অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় গত বুধবার উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীকে আমরা পাঁচ চেয়ারম্যান ঐক্যবদ্ধ হয়ে উখিয়ার মানুষের অধিকার আদায়ে জেলা প্রশাসক ও আরআরআরসি’র কাছে গিয়ে আমাদের অধিকার ফিরিয়ে আনার কথা বলে প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু এই প্রস্তাব দেওয়ার পরে তিনি তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে সরাসরি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছেন।

চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিনি স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সবার সিনিয়র হওয়ায় আমরা তার নেতৃত্বে একত্রিত হয়ে উখিয়ার মানুষের কথা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু তিনি এসবে রাজি না।

তিনি আরও বলেন, আমি আশা করেছিলাম চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীকে প্রস্তাব দেওয়ার পরে স্বাচ্ছন্দে প্রস্তাব গ্রহণ করবেন এবং সাধুবাদ দিবেন। কিন্তু তার প্রত্যাখ্যান দেখে উখিয়া উপজেলার প্রশাসনের সবাই হতবাক হয়ে গেছেন তার এই আচরণে। যা অত‍্যন্ত দুঃখজনক।

গতকাল হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস বলেন, উখিয়ার মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে আমরা কাজ করে যেতে চাই। আর যদি নেতৃত্ব দেওয়ার সেই ক্ষমতা না থাকে তবে আপনি আমাদের সাথে একত্বতা পোষণ করে আমাদের সাথেই চলেন। আমরা সবাই মিলে উখিয়ার মানুষের জন্য কিছু করি।

আরও খবর