কক্সবাজার বিমানবন্দরে কোনো পাস ছাড়াই কাজ করছেন রাশিয়া ও তাজিকিস্তানের দুই প্রকৌশলী। তাঁদের ভিসার মেয়াদও পার হয়ে গেছে।
বিমানবন্দরে বেসরকারি একটি এয়ারলাইনসে উড়োজাহাজ মেরামতের কাজ করছেন তাঁরা। তবে তাঁরা কত দিন ধরে ও কোন পদে এভাবে কাজ করছেন, তা জানাতে পারেননি বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বেবিচক বলছে, রাশিয়ার ওই প্রকৌশলীর নাম আবদুসাইদোভ নিশোনবই। আর তাজিকিস্তানের প্রকৌশলীর নাম হোমিদোভ বখতিয়র। গত ২৮ এপ্রিল তাঁদের ভিসার মেয়াদ পার হয়েছে। তাঁরা যে ভিসায় বাংলাদেশে এসেছেন, তাতে উল্লেখ আছে, এ দেশে তাঁরা বেতন বা বিনা বেতনে কাজও করতে পারবে না।
দুই প্রকৌশলী কক্সবাজার বিমানবন্দরে ট্রু এভিয়েশন নামে বেসরকারি একটি এয়ারলাইনসে কাজ করেন। গত ১৪ মে বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড, রেগুলেশনস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (এফএসআর) বিভাগের দুজন পরিদর্শক কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন। এ সময় এই দুই প্রকৌশলীর কাজ করার অনুমতি না থাকার বিষয়টি বেবিচকের নজরে আসে।
কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চলছে। কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে দুই প্রকৌশলী বিমানবন্দরে ঢুকলেন কি না, তা দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোলাম মুর্তজা।
ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া এবং কাজের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও দুই বিদেশি প্রকৌশলীর কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রবেশ এবং কর্মরত থাকা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছে বেবিচক।
বেবিচকের এফএসআর বিভাগের পরিচালক মো. মুকিত-উল-আলম মিঞার স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে বলা হয়, ‘বিদেশি কোনো ইঞ্জিনিয়ার বা পাইলটদের বাংলাদেশি কোনো নিবন্ধনভুক্ত কোনো উড়োজাহাজে কাজ করতে বা উড়োজাহাজ চালাতে এফএসআর বিভাগের অনুমতি প্রয়োজন হয়, যা তাঁদের ছিল না। এই অনুমতিহীন অবস্থায় পাস ইস্যু করা এবং তা ব্যবহার করে উড়োজাহাজে কাজ করা উড়োজাহাজের জন্য নিরাপদ নয়। এ ধরনের বিদেশি প্রকৌশলী কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রবেশ বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।’
দুই প্রকৌশলীর এভাবে কাজ করার বিষয়টি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান গত ৩০ মে এক চিঠিতে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমানকে জানিয়েছেন। সে চিঠিতেও বলা হয়, রাশিয়ান ও তাজিকিস্তানের ওই দুই প্রকৌশলীর বাংলাদেশে কাজ করার ক্ষেত্রে বিডার অনুমতি নেই। এমনকি তাঁদের দুজনের এ দেশে কাজ করারও অনুমতি নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মুর্তজা হোসেন বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরে পাসহীন অবস্থায় বাইরের কারও ভেতরে ঢোকার সুযোগ নেই। অবশ্যই ভেতরে ঢুকতে হলে পাসের দরকার হয়। ওই দুই প্রকৌশলী কীভাবে বিমানবন্দরের ভেতরে পাস ছাড়া ঢুকলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চলছে। কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে দুই প্রকৌশলী বিমানবন্দরে ঢুকলেন কি না, তা দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোলাম মুর্তজা।
/প্রথম আলো
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-