কক্সবাজার সৈকতে পতিতা-হিজড়া ও ছিনতাইকারী চক্রের ফাঁদ

কক্সবাজার প্রতিনিধি •

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সন্ধ্যার নামার আগে দেখা মিলবে সংঘবদ্ধ কিছু নারী। তাদের দেখে মনে হবে দল বেঁধে বেড়াতে এসে উপভোগ করছেন। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা এমন নয়। নারীদের এই দলে থাকা সবাই ভাসমান পতিতা। তারা এখানে দেহ ব্যবসার জন্যও আসেননি। তারা অপেক্ষা করছে এক অভিনব স্টাইলে শিকার ধরার জন্য। আর তাদের আশেপাশে ছদ্মবেশে অবস্থান করছে পেশাদার ছিনতাকারীরা।

এই পতিতারা ফুঁসলিয়ে কোনো খদ্দেরকে নিয়ে যাবে নির্জন স্থানে। আর সেখানে ওৎপেঁতে থাকবে ছিনতাইকারীরা। তারপর তারা সবাই মিলে ওই খদ্দেরের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেবে। পতিতা ও ছিনতাইকারীদের সমন্বয়ে গড়ে উঠা এই সিন্ডিকেটটি বেশ কিছু দিন ধরে সমুদ্র সৈকতে সক্রিয় রয়েছে।

তারা এভাবে জিম্মি করে বহু মানুষের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়েছে। এই সিন্ডিকেটের সাথে রয়েছে কয়েকজন হিজড়াও। সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় তাদের শিকার ধরার মহড়া। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে কিছুদিন ধরে এসব অপরাধী চক্রের দেখা মিলছে।

সব মিলে অন্তত ১০টি সিন্ডিকেটের শতাধিক পতিতা, ছিনতাইতারী ও হিজড়া সৈকতে এই ফাঁদ বসিয়েছে বলে অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

সৈকতে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এই সিন্ডিকেটটি সুকৌশলে সৈকতে বেড়াতে এসে এক শ্রেণীর লোকজনকে ফুঁসলিয়ে জিম্মি করে সর্বস্ব হাতিয়ে নিচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সন্ধ্যার পর পতিতারা সৈকতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যায়। তারপর পুরুষদের টাকার বিনিময়ে সঙ্গমের ফাঁদে ফেলায়। কথা পাকা হলে নিয়ে যায় নির্জন স্থানে। সেখানে গেলে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা ছিনতাইকারী তাদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়।

ফাঁদ পেতে বসে থাকা কয়েকজন পতিতার সাথে ছদ্মবেশে কথা বললে তারা প্রথমে নিজেদের পতিতা বলে স্বীকার না করলেও পরে স্বীকার করে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে চলছে এই ছিনতাই সিন্ডিকেটের অপতৎরতা। বিষয়টি পুলিশের নজরে এসেছে কিনা- তা জানতে যোগাযোগ করা হয় ট্যুরিস্ট পুলিশের সাথে।

তারা জানায়, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ তাদের কাছে আসে নি। তবে বিষয়টি অবগত হয়ে সাথে সাথে অভিযানে নামে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পুলিশের অভিযান টের পেয়ে কয়েকজন হাতেনাতে ধরা পড়লেও সটকে পড়েন অনেকে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেছেন, সৈকতের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ কোনো অপরাধীকে ছাড় দিচ্ছে না। ছিনতাইকারীদের ধরতে প্রতিনিয়ত টহল জোরদার রাখা হয়েছে। চক্রের সদস্যসহ তাদের পেছনে কারা আছে তাদেরও ধরতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সৈকতে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।

আরও খবর