মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটূক্তি করায় বিজেপি নেত্রীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সারা দেশ। গতকাল জুমার নামাজ পরবর্তী সময়ে মিছিল-সমাবেশ কর্মসূচিতে উত্তাল ছিল দেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত এলাকার পাড়া-মহল্লা।
বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে এ বিক্ষোভে অংশ নেয়। বিক্ষোভে উত্তাল ছিল বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। এসব সমাবেশ থেকে অনতিবিলম্বে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দালের শাস্তি দাবি করা হয়। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের বিপক্ষে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপনের দাবি তোলা হয়। ভারতের সকল ধরনের পণ্য বয়কট করার হুমকিও দেয়া হয় এসব কর্মসূচি থেকে।
এছাড়া আগামী বৃহস্পতিবার গণমিছিলসহ ভারতীয় দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তীব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করে গতকাল রাজধানীসহ দেশজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন মুসল্লিরা। বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ বেশ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন।
বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, আজ ভারত সরকার মুসলমানদের উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করছে।
তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোটা ভারত থেকে মুসলমানদের বিতাড়িত করবে। ভারতে যারা মুসলমান আছে তাদের বাপ, দাদা ভারতে জন্ম নিয়েছে। তাই ভারতে মুসলমান থাকবে, নেতৃত্ব থাকবে।
সমাবেশ থেকে আগামী ১৬ই জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ভারতের দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল ও স্বারকলিপি পেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে ‘আমরা সবাই নবীর সেনা, ভয় করিনা বুলেট বোমা’, ‘বিশ্বনবীর অবমননা, সহ্য করা হবে না’, ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার-সবাধান’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এছাড়াও ‘বয়কট ইন্ডিয়ার প্রোডাক্ট’, ‘এক্সপেল ইন্ডিয়ান ওয়ার্কার্স’, ‘বিশ্ববাসীর বোঝা উচিত, আমরা মুহাম্মদ (সা.)কে নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি’, মানি না, মানবো না, মানতে পারি না, আল্লাহ রাসুলের অবমাননা ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা যায় অনেককে। এদিকে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী তেজগাঁও রহিম মেটাল জামে মসজিদের দক্ষিণ গেটেও এক বিশাল গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গনজমায়েতে বিশিষ্ট আলেম আল্লামা মাহমুদুল হাসান মমতাজী বলেন, মহানবীর (সা.) মর্যাদা রক্ষায় আমরা জীবন দিতেও প্রস্তুত। এই বিজেপি বার বার মুসলমানদের কলিজায় আঘাত হানছে, কখনো বাবরী মসজিদ, কখনো হিজাব, কখনো আজান, কখনো গোহত্যা বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কটূক্তিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। প্রতিবাদ সমাবেশে তারা অবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা প্রস্তাব আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-