ডেস্ক রিপোর্ট •
বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে কক্সবাজার গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক তরুণী। এরপর ফিরে এসে চট্টগ্রামের বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি।
মৃত্যুর আগে একটি কাগজে তিনি তার ধর্ষণের কথা এবং জড়িতদের নাম উল্লেখ করে যান।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক টমটম (ইজিবাইক) চালক রুবেল ও ওই তরুণীর বন্ধু জিসানুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার বেলা ১২টায় রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর। তবে অভিযুক্তদের কবে গ্রেফতার করা হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি। ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
মুক্তা ধর জানান, ফেসবুকে পরিচয়ের সুবাদে এক বছর ধরে জিসানুল ইসলামের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই তরুণীর। জিসান চট্টগ্রাম মহানগরের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় অবস্থিত ‘ফুলকলি মিষ্টির’ কারখানায় কাজ করতেন। পরে কক্সবাজারে বেশি বেতনে চাকরি পেয়ে নতুন কর্মস্থলে চলে যান জিসান।
তবে মোবাইলে জিসানের সঙ্গে ওই তরুণীর নিয়মিত যোগাযোগ হতো। এক পর্যায়ে জিসানের আমন্ত্রণে ওই তরুণী তার বান্ধবীকে নিয়ে কক্সবাজারে দেখা করতে যান।
কক্সবাজারে যাওয়ার পর জিসান জানান তিনি ব্যস্ত আছেন, দেখা করতে পারবেন না। পরে ওই তরুণী জিসানের সঙ্গে দেখা না করে যাবেন না বলে জানান। এরপর জিসান তার তিনজন বন্ধুকে ওই তরুণীর কাছে পাঠিয়ে দেখা করতে পারবে না বলে জানান এবং তাদের চট্টগ্রাম ফিরে যাওয়ার জন্য বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এক পর্যায়ে চট্টগ্রামে ফিরে যাওয়ার জন্য বান্ধবীকে নিয়ে একটি টমটম করে বাসস্ট্যান্ডে যান মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই তরুণী। টমটম চালক রুবেল তার কাছ থেকে ঘটনা জানার পর আশ্বস্ত করেন যে- জিসান তার পূর্বপরিচিত। তাকে সময় দিলে তিনি যেভাবেই হোক জিসানের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করে দেবেন।
এ সময় টমটম চালকের কথায় আশ্বস্ত হয়ে তিনি তা সরল মনে বিশ্বাস করেন। এরপর রুবেল তরুণীর বান্ধবীকে একটি চট্টগ্রামগামী বাসে তুলে দেন।
রুবেল পরে জিসানকে খুঁজে বের করার অভিনয় করে ওই তরুণীকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করে কালক্ষেপণ করেন। জিসানকে খবর দেওয়া হয়েছে এবং সে রাতের বেলা এসে জিসানের পরিচিত ৬ নম্বর ঘাটের পার্শ্ববর্তী ‘হোটেল আলামিন’-এ এসে ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করবে মর্মে মিথ্যা তথ্য দেন এবং এ কথা বলে ওই হোটেলে রুম নিয়ে দেন।
এরপর রাতে জিসান এসেছে মর্মে রুবেল হোটেলের রুমের দরজা খোলার জন্য তাকে বললে ওই তরুণী দরজা খুলে দেন। তখন রুবেল ওই হোটেল রুমে প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে কৌশলে পালিয়ে যান।
এরপর ওই তরুণী নিরুপায় হয়ে গত ১ জুন রাতে চট্টগ্রামে তাদের বাসায় ফিরে আসেন। এরপর ৩ জুন ভোরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় ওই তরুণীর বোন জিসানুল ইসলাম ও টমটম চালক রুবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগরের (সিএমপি) বায়েজিদ বোস্তামী থানায় ৪ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-