টেকনাফে ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙণে হুমকির মুখে সাইক্লোন সেন্টার!

টেকনাফ সংবাদদাতা •

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফনদীর তীর ঘেষা শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা বিশিষ্ট একটি সাইক্লোন সেন্টার স্কুল ভবন ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে।

জরুরি ভিত্তিতে টেকসই জিও ব্যাগের মাধ্যমে জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাত রক্ষা করা সম্ভব না হলে যেকোনো সময় নদী গভে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন চৌধুরী।

এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় সূত্র জানায়,উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া জেলেপল্লিতে স্বাধীনতার পরে ১৯৭৩সালে নাফনদীর বেড়িবাঁধের বাহিরে জেলেপল্লীর শিশু-কিশোরদের কথা বিবেচনা করে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।একই বছর বিদ্যালয়টি সরকারি করা হয়।

বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২৬০জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।প্রধান শিক্ষকসহ মাত্র দুইজন শিক্ষক দিয়ে চলছিল স্কুলের পাঠদান।১৯৯১সালের ২৯এপ্রিলের ঘূণিঝড়ের পর সৌদিআবর সরকারের আথিক সহায়তায় এস্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারটি নিমাণ করা হয়।এটিসহ বিদ্যালয়ে তিনটি স্কুল ভবন থাকলেও প্রতিনিয়ত জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে তিনতলার সাইক্লোন সেন্টারটি হুমকির মুখে পড়েছে।

এদিকে,২০২১সালের ২৫মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের অস্বাভাবিক জোয়ারের আঘাতে আরও দুটি ভবন হুমকির মুখে পড়েছিল।তখন জিও ব্যাগের মাধ্যমে কোনো রকমে রক্ষা করা হয়।বর্তমানে অপরটি ভাঙনে হুমকিতে রয়েছে।

সরেজমিনে সকালে দেখা যায়,আকাশ মেঘাচ্চন্ন।একের পর এক ঢেউ আঁচড়ে পড়ছে জিও ব্যাগে ওপর।জোয়ারের তালে তালে ঢেউয়ের আঘাতে বালিয়াড়ি ভাঙণও বড় হচ্ছে।এসময় নাফনদীর জোয়ারের ঢেউয়ে শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা সাইক্লোন সেন্টারের পূব-উত্তর পাশ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে।এতে করে ওই ভবনটি নাফনদীতে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা হালিমা আক্তার বলেন,ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে হুমকির মুখে পড়েছিল।ওইসময় কিছু অংশে জিও ব্যাগ দেওয়া হলেও পুনরায় হুমকিতে পড়েছে। তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়া না হলে যেকোনো সময় নদীর গভে বিলিন হওয়ার পাশাপাশি বড় ধরনের দূঘটনা শঙ্কাও রয়েছে।

সাবরাং ইউপির ৯নং ওয়াডের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন,শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার এ জেলে পল্লীতে একটি মাত্র বিদ্যালয় রয়েছে।পাশাপাশি পুরো এলাকাজুড়ে একমাত্র সাইক্লোন সেন্টার এটি।ঘুণিঝড়ের কোনো সংকেত দেখা দিলে স্থানীয় লোকজন আশ্রয়ে ছুঁটে চলে এটিতে।ভবনটি বর্তমানে ঝুঁকিতে রয়েছে।ভবনটি রক্ষা করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন, জরুরী ভিত্তিতে এখনই কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে ভবনটি নাফ নদীতে বিলিন হবার সম্ভাবনা খুবই বেশি।এর পাশাপাশি অবস্থানরত আরও দুটি ভবনও হুমকিতে পড়বে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)মোহাম্মদ কায়সার খসরু বলেন, বিয়ষটি শুনার পর আমি সরেজমিনে পরিদশন করে এসেছি।জরুবি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিতভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে।ব্যক্তিগত ভাবে পানি উন্নয়ন বোডের সঙ্গে কথা বলেছি এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিস্ট দপ্তরে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।

পাউবো পানি উন্নয়ন বোডের টেকনাফে উপ-প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন,প্রতিরক্ষার জিও ব্যাগ নষ্ট হয়ে গেছে।এতে করে স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারটি হুমকিতে পড়েছেন বলে শুনেছি।সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে নিদেশনা পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।

আরও খবর