এম,এস রানা, উখিয়া :
আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় তা আমরা গাছ থেকে পেয়ে থাকি। পৃথিবীতে যত বেশি গাছ রোপন করা হবে তত বেশি আমরা সুন্দরভাবে বাঁচতে পারব।
আমরা যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের করে দিয়ে থাকি,গাছ সে কার্বণ-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ লাগানোর কোন বিকল্প নেই। গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান এই শ্লোগানে উদ্ভুদ্ধ হয়ে উখিয়ার ২ ভাই সনজিত চৌধুরী ও সমীর চৌধুরী একদিকে নিজেদের আয় রোজগারের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়া ছাড়াও অন্যদিকে তৈরি করছেন অন্যের কর্মসংস্থান। পাশাপাশি তাদের এই উদ্যোগ এলাকায় বনায়নসহ জলবায়ু পরির্বতনের কুপ্রভাব থেকে দেশকে মুক্ত করায় রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের গুরা মিয়া গ্যারেজ এলাকার রাস্তার পশ্চিম পার্শে এক একর অন্যের জমি চুক্তিভিত্তিক বর্গা নিয়ে গড়ে তুলেছে জোৎস্না নার্সারী যাতে রয়েছে ৫ শতাধিকেরও অধিক প্রজাতির বনজ,ফলজ,ঔষধি ও নানান ফুলের চারাগাছের ভান্ডার।
তৎমধ্যে মেহগুনি গর্জন চিকরাশি গামারী করই সেগুন ঝাউ জারুল জাম আকাশমণি ও চাম্পা সহ ২ শতাধিক প্রজাতির বনজ বৃক্ষ চারা। ফলজ গাছের চারার মধ্যে রয়েছে পালীআম বার্মিজ আম,কাঠাল নারকেল, দেশি লেবু, সীট লেবু লিচু মালটা কমলা জলপাই পেঁপে দেশি আমড়া উল্লেখযোগ্য।
ঔষধি গাছের মধ্যে রয়েছে নিম, হরতকী আমলকী বহেরা অর্জুন সহ নানান চারা। ফুলের চারাগাছের মধ্যে বিক্রির শীর্ষে রয়েছে গোলাপ, গন্ধরাজ গাঁদা নয়নতারা ডালিয়া স্টারফুল সুর্যমুখী ডাইন টায়, কসমস পিটুনিয়া ও কাগজি বিলাস ইত্যাদি।
সরজমিনে দেখা যায়, গুরা মিয়া গ্যারেজ ষ্টেশন সংলগ্ন কক্সবাজার টেকনাফ মহা সড়কে লাগোয়া জোৎস্না নার্সারীতে ১০/১২ জন শ্রমিক চারাগাছের পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে, তাদের সঙ্গদিয়ে কাজ করে যাচ্ছে দুই ভাই সনজিত চৌধুরী ও সমীর চৌধুরী।
সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা বীজ বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরাজির চারায় চারায় ভরপুর। অনেক চারাগাছে মৌসুমী ফলে ফুলে বিকালের ডুবন্ত সুর্যের আলোতেও প্রকৃতির কিরন ছড়াচ্ছে। বারমাসি নানান ফলের পাশাপাশি মৌসুম জামরুদ, আম,লেব,কমলা মালটা পেঁপে পেয়ারা আমড়া গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে, হরেকরকম ফুলের সুভাসে প্রজাপতিরা ডানা মেলেছে।
ছোট ভাই সমীর চৌধুরী বলেন, তাদের এই জেৎস্না নার্সারীটি সরকার অনুমোদিত। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন করা হয়েছে যার নার্সারী নিবন্ধন নং ডি এই UK 13. এছাড়াও তিনি ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে নার্সারীর উপর মাসব্যাপী ট্রেনিং নিয়েছেন বলেও জানান। সমীর চৌধুরী আরো বলেন আমাদের কাছে উন্নতমানের বীজ থেকে উৎপাদন ছাড়াও কলম,ষ্টাম কাটিং সহ চার ধরনেরই উৎপাদিত চারা সরবরাহ, বিপনন, বিক্রি করে থাকি।
আমাদের নার্সারী কক্সবাজার ও উখিয়া বৃক্ষ মেলায় ইতিমধ্যে অংশগ্রহণ করে সুনাম অর্জনের পাশাপাশি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। বড় ভাই সনজিত চৌধুরী বলেন, আমরা সব সময় ভাল জাতের বিচ থেকে উৎপাদন করে থাকি। গাছ আমাদের পরম বন্ধু, গাছ মানুষ কে অক্সিজেন সাপ্লাই দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে।
আমরা বিগত ৩৫ বছর যাবত এই জোৎস্না নার্সারীর মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ১০/১২ জন লোকের কর্মসংস্হান হয়েছে তাছাড়াও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রাখছে বিশাল ভুমিকা। সরকারের সহযোগিতা পেলে এই নার্সারীতে আরো অধিক পরিমাণে চারা উৎপাদন করতে সক্ষম হবো।
দেশের বনায়ন বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের তাপমাত্রা বৃদ্ধিরোধে এ নার্সারীগুলোতে উৎপাদিত চারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এখানকার বিভিন্ন গাছের চারা নিজেদের বাড়িতে রোপন করতে এই নার্সারী বৃক্ষপ্রেমীদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বলে তিনি করছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-