বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ফসলি জমি ও লবণ মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত

কালবৈশাখীতে ব্যাপক ক্ষতি: দুজনের মৃত্যু, শিশুসহ আহত ১০

বিশেষ প্রতিবেদক •

মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ফটিকছড়ি ও মহেশখালীতে দুজন নিহত হয়েছেন। পটিয়ায় শিশুসহ আহত হয়েছেন ১০ জন। এছাড়া গতকাল বুধবারের এ কালবৈশাখী ঝড়ে বিভিন্ন উপজেলায় মানুষের বসতঘর, ফসলি জমি, গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি ও লবণ মাঠের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে করে কয়েকটি উপজেলায় সৃষ্টি হয় দীর্ঘ বিদ্যুৎ বিভ্রাট।

ফটিকছড়িতে গৃহবধূর মৃত্যু : ফটিকছড়ি প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকাল নয়টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে গাছের চাপায় রীনা আক্তার (৪০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ঝরঝরি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রীনা আক্তার ঝরঝরি গ্রামের মোহাম্মদ শাহ আলমের স্ত্রী।

তাদের ২ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তান রয়েছে। ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাব্বির রাহমান সানি জানান, সকালে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে একটি গাছ উপড়ে শাহ আলমের বসতঘরের ওপর পড়ে। তার স্ত্রী রীনা আক্তার তখন ঘরের ভেতরে ছিলেন। গাছ চাপা পড়ে তিনি গুরুতর আহত হন। পরিবারের সদস্যরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রীনা আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন। ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ফাতেমা জামান বলেন, রীনা আক্তারের মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম ছিল। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

মহেশখালীতে নৌকা ডুবে একজন নিহত : মহেশখালী প্রতিনিধি জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে যাত্রীবাহী নৌকা ডুবে আবদুল হাই (৪৭) নামে একজন কোরআনের হাফেজ নিহত হয়েছেন। তিনি অন্ধ ছিলেন। আবদুল হাই মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের সামিরার ডেইল গ্রামের মৃত ফরিদুল আলমের পুত্র। গতকাল সকালে নৌকায় মহেশখালীর মাতারবাড়ী থেকে কুতুবদিয়া যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত আবদুল হাই গতকাল সকালে নিজের একজন সহযোগীসহ একটি ডেনিস বোট ভাড়া নিয়ে জায়গা-জমি কিনা সংক্রান্ত বিষয়ে কুতুবদিয়ায় যাচ্ছিলেন। পথে মাতারবাড়ীর পশ্চিমে সাগরে হঠাৎ কালবৈশাখীর কবলে পড়ে তাদের বোটটি। এ সময় চালকসহ তারা তিনজন নদীতে পড়ে যান। চালক ও তার সহযোগী সাঁতরিয়ে কূলে উঠতে সক্ষম হলেও অন্ধ হাফেজ আবদুল হাই সাগরে ডুবে মারা যায়।

চকরিয়ায় অর্ধশত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত : চকরিয়া প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকাল সাড়ে দশটার দিকে চকরিয়ায় কালবৈশাখীর ভয়াবহ তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, ফসল, গাছপালা ও লবণমাঠের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘণ্টাব্যাপী তীব্র ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিপাতে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে অন্তত অর্ধশত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া ডুলাহাজারা ইউনিয়নে শতবর্ষী মাদার ট্রি (গর্জন) ভেঙে পড়ে ১০টি বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এ সময় ঘরের ভেতর থাকা শিশুসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, কালবৈশাখীর তীব্র ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টির সময় ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ডুমখালী রিজার্ভ পাড়া ও সুয়াজিন্নাহ এলাকায় শতবর্ষী মাদার ট্রিসহ গাছপালা ভেঙে পড়ে ১০টি বসতবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এ সময় আহত হয় শিশুসহ অন্তত ১০ জন নারী-পুরুষ। তাদেরকে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পরিবারগুলোকে ব্যক্তিগতভাবে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

একইভাবে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে অসংখ্য ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফলে সারাদিন বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ ছিল। গতকাল রাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিদ্যুতের দেখা পায়নি উপজেলাবাসী।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের প্রধান সহকারি বাবুল কান্তি দাশ বলেন, বুধবার সকালে একঘণ্টার তীব্র কালবৈশাখীতে বিভিন্ন ইউনিয়নে অসংখ্য ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার তথ্য মৌখিকভাবে জানিয়েছেন স্ব স্ব ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চকরিয়া কার্যালয়ের আবাসিক প্রকৌশলী গীতি বসু চাকমা বলেন, কালবৈশাখীর ঝড়ো হাওয়ায় গাছপালা ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন মেরামতের কাজ চলছে। এজন্য সারাদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখীর ছোবলে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বসতবাড়ি, ফসলি জমি, লবণ মাঠ। তীব্র ঝড়ো হাওয়ায় অসংখ্য গাছপালা ভেঙে পড়ায় অনেকস্থানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে তা অপসারণ করে সচল করা হয়। জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্তদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হবে।

বাঁশখালতে বসতঘর ও লবণ মাঠের ক্ষয়ক্ষতি : বাঁশখালী প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকালে বাঁশখালীতে প্রচন্ড ঝড় ও বৃষ্টিতে বিদ্যুতের খুঁটি, বসতঘর ও লবণ মাঠের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে গাছ ভেঙ্গে বিদ্যুতের খুঁটি নষ্ট হওয়ায় পুরোদিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলো। গতকাল রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কখন বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি বাঁশখালী পল্লী বিদ্যুতের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, হঠাৎ প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য আমাদের জমা দেয়নি।
রাঙ্গুনিয়ায় বসতঘর ও ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি : রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে ঘরবাড়ি, বিদ্যুৎ সংযোগ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল ভোরে হঠাৎ হালকা বৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলতে থাকে কালবৈশাখীর তাণ্ডব। এ সময় গাছপালা সড়কে পড়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ রাঙ্গুনিয়া জোনাল অফিসের এজিএম ও এন্ডএম খালেদ মাসুদ মজুমদার বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক তার বিচ্ছন্ন হয়েছে। সেসব চিহ্নিত করে কাজ করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন স্থানীয়রা। পৌরসভায় স্মার্টকার্ড বিতরণেও এর প্রভাব পড়েছে।

আনোয়ারায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি : আনোয়ারা প্রতিনিধি জানান, গতকাল কালবৈশাখীর ছোবলে বিদ্যুৎ লাইনসহ গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে উপজেলার ৮০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েছেন। গতকাল এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ লাইন সচল করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নের বোরো ধানের কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় রমজানে ভোগান্তিতে পড়েন ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, সকালে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া শুরু হওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে। ঝড়ো হাওয়ার কারণে বোরো ধানের ফসলের ও ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া উপজেলার বারখাইন, বরুমচড়া, হাইলধর, জুঁইদন্ডীসহ বিভিন্ন স্থানে মাঠের আধাপাকা ধান পড়ে গেছে। এতে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এছাড়া কালবৈশাখী শুরু হওয়ার পর থেকে সারাদিন উপজেলায় কোথাও বিদ্যুৎ সচল ছিলো না।

বারশত ইউনিয়নের বাসিন্দা মহিউদ্দিন মঞ্জুর বলেন, এক শ্রেণির অসাধু লোক বিগত ২ মাস ধরে ফসলি জমির মাটি কেটে সড়ক দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করায় পুরো সড়ক মাটির স্তুপে পরিণত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। গতকাল কালবৈশাখী ঝড়ে এসব সড়ক পিচ্ছিল হয়ে মরণ ফাঁধে পরিণত হয়। এতে সড়কে বেশ কয়েকটি যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়। পথচারীরা পড়েন ভোগান্তিতে।

আনোয়ারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, কালবৈশাখীর কারণে আনোয়ারায় তেমন বেশি ক্ষতি হয়নি, তবে কিছু জায়গায় পাকা ধান পড়ে গিয়ে কিছু ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। আনোয়ারা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়ার কারণে সিইউএফএল ও মেরিন একাডেমী এলাকাসহ বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করা সম্ভব হয়নি। আশা করি রাতের মধ্যে চালু করা যাবে।

লোহাগাড়ায় ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি : লোহাগাড়া প্রতিনিধি জানান, গতকাল লোহাগাড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ও যানবাহন চলাচল। প্রবল বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশকিছু ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নষ্ট হয়ে গেছে ক্ষেতের ফসল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে কলাউজান ইউনিয়নের তেইল্যাপুকুর এলাকায় গাছ পড়ে সড়কের উপর দুমড়ে-মুচড়ে গেছে সিএনজি অটোরিকশা। চরম্বা ইউনিয়নের নাছির মোহাম্মদ পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের তৈরি শ্রেণিকক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা হারুন অর রশিদের ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। তার বেশ কয়েকটি গাছ ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ১৫-২০টি বসতঘরের টিনের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

লোহাগাড়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে প্রায় ১৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে গেছে। অর্ধশতাধিক স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে গেছে। এছাড়া দেড় শতাধিক স্থানে গাছের ডালপালা ভেঙ্গে তারের উপর পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লাইন ঠিক করতে কাজ করছে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন। যতদ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে চেষ্টা করছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে এলাকার কিছু ধানক্ষেত ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরি করা হবে।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান হাবিব জিতু বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে ঝড়ের কবলে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেয়া হবে।

মীরসরাইয়ে অর্ধশতাধিক বসতঘরের ক্ষয়ক্ষতি : মীরসরাই প্রতিনিধি জানান, গতকালের কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার অর্ধশতাধিক বসতঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ সময় প্রায় ঘণ্টাখানেক শিলাবৃষ্টি, বর্জ্রপাত ও ঝড়ো হাওয়ায় ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার অনেক স্থানে গাছপালা ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কাঁচা ও নরম অনেকের বসতিই পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

মিঠাছরা গ্রামের আবব্দুল কাদেরের টিনের ঘরের সকল টিনই উড়ে চলে যায়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাটে গাছ ভেঙ্গে পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। রাতে এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত পুরো উপজেলা বিদ্যুৎবিহীন ছিলো।

মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইার কাজী নুরুল আলম বলেন, বোরো ও মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সঠিক তথ্য শীঘ্রই জানা যাবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমান বলেন, বিভিন্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির সঠিক খোঁজ খবর নিচ্ছি, কোথাও মানবিক সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তা করা করা হবে।

কাপ্তাইয়ে সড়কে উপড়ে পড়েছে গাছ : কাপ্তাই প্রতিনিধি জানান, গতকাল দুই দফায় কালবৈশাখী ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। ফলে সমগ্র এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি সারাদিন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়।

আরও খবর