উখিয়ায় অস্তিত্বের সঙ্কটে কাশিয়ার বিল শ্মশান: গাফিলতি কার?

মোহাম্মদ ইমরান, উখিয়া:

উখিয়ায় কাশিয়ার বিল এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ২’শত বছরের পুরোনো শ্মশানের গাইড ওয়াল ভেঙে আবারও শ্মশানটি খালের পানির স্রোতে বিলীন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বাব দাদার পুরোনো শ্মশানটি রক্ষা করতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ইতিমধ্যে মহা চিন্তায় পড়েছেন।

উপজেলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের ৮ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প বরাদ্দ হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মেসার্স ফিরোজা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। প্রকল্পের ২’টি প্যাকেজের মধ্যে ১’টি প্যাকেজ হলো কাশিয়ারবিল হিন্দু পাড়া শ্মশানের খালের পাড়ের গাইড ওয়াল নির্মাণ করা। পরবর্তীতে গাইড ওয়ালটি ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা চুক্তি মূল্যে নির্মিত হয়েছিল।

সরেজমিন জানা যায় , শ্মশানের নির্মিত গাইড ওয়ালটি খালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে যা দ্রুত সংস্কার করা না হলে চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমে খালের পানির স্রোতে শ্মশানটি আবারও বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

এদিকে, স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলেন, একবছর আগে পুরোনো শ্মশানটি ভাঙনের কবলে পড়লে, উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে শ্মশানটি রক্ষা করতে একটি গাইড ওয়াল নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছিল।

তবে, ওয়ালটি বর্ষা মৌসুমের শুরুতে নির্মাণ করা হলেও যথাযথ টেকসই না হওয়ার কারণে একই বছরের বর্ষা শেষ না হতেই আবারও ওয়ালটি খালে বিলীন হয়ে যায়। শ্মশানটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই শ্মশানটি খালে বিলীন হওয়ার সম্ভবনা আছে বলে এমনটা আশংকা করেছেন তারা।

তারা আরো বলেন, শ্মশানের চারপাশের ঘরবাড়ি থাকার কারণে প্রতিদিন শ্মশানের উপরে গরু ছাগল বেধে দেওয়া হয়। তাদের কে বাঁধা দেওয়ার মতন সাহস আমাদের নাই বললেই। সুতরাং আমরা প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই অতিদ্রুত যেন উন্নতমানের একটি গাইড ওয়াল দিয়ে শ্মশানটি রক্ষা করা হয় পাশাপাশি শ্মশানের পবিত্রতা রক্ষার্থে চারপাশে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, গত কয়েকদিন আগে সাবেক এমপি আব্দু রহমান বদি কাশিয়ারবিল হিন্দু পাড়ায় একটি রাস্তা পরিদর্শনে আসলে অত্র এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের শ্মশানটি রক্ষা করার জন্য দাবী জানালে বদি তাদেরকে কাজ করে দেবেন বলে আশ্বস্তও করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসার রুকুনুজ্জামান বলেন, আমি যেহেতু নতুন এসেছি আসলে বিষয়টা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, শ্মশানের বিষয় টা সম্পর্কে আসলে আমি তেমন কিছু জানিনা। তারপরও যেহেতু শুনলাম অবশ্যই উপজেলা চেয়ারম্যান এর সাথে বসে একটা সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানিয়েছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান হামিদুল হক চৌধুরী বলেন,
শ্মশানের গাইড ওয়াল নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দূর্নীতি করেছিল নাকি ইন্জিনিয়ারের গাফিলতি ছিল এটা ইন্জিনিয়া’র সাথে কথা বলে মন্তব্য করতে পারবো। সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টা দেখতে হবে তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হলে অবশ্যই নেবো। তবে, আপাতত এক বছরের মধ্যে আরেকটি প্রকল্প দেওয়ার কোন সুযোগ নাই আমাদের।

আরও খবর