মাহাবুবুর রহমান •
সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে প্রবাসীরা। দ্বিগুন দাম দিয়েও মিলছে না বিমান টিকিটে। আবার কেউ টিকিট পরিবর্তন করতে চাইলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছে টিকিট নেই।
তবে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঠিকই মিলছে টিকিট। প্রবাসীদের দাবী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে চলে গেছে বিমান টিকিট। এতে বিপুল টাকা গচ্ছা যাচ্ছে প্রবাসী যাত্রীদের।
অপর দিকে সরকার তেমন লাভবান না হলেও ঠিকই লাভবান হচ্ছে মধ্যসত্বভোগীরা। এ বিষয়ে কোন সদুত্তর নেই কর্তৃপক্ষের।
পিএমখালী ঘাটকুলিয়াপাড়া এলাকার প্রবাসী রমজান মোবারক ৫ মাস আগে ছুটিতে সৌদি আরব থেকে এসেছিলেন। তার ফিরতি টিকিটের সময় ছিল ১৬ মে কিন্তু এর মধ্যে জরুরী প্রয়োজনে আবার সৌদি ফেরত যেতে হলে টিকিট পরিবর্তন করতে চাইলে কক্সবাজার বিমান অফিস সাফ জানিয়ে দেয় কোন টিকিট নেই। তবে অনেক চেস্টা তদবির করে ঠিকই মোটা অংকের বিনিময়ে টিকিট পেয়েছেন সে।
রামুর জোয়ারিয়ানালা এলাকার প্রবাসী নুরল আমিন জানান, আমি ১৬ বছর ধরে সৌদিতে থাকি। করোনার সময় দেশে এসেছিলাম এখন যেতে যাইছি বিমান অফিস বলছে টিকিট নেই। পরে একটি এজেন্সির কাছ থেকে এক লাখ টাকার কিছু বেশি টাকা দিয়ে টিকিট করিয়েছি।
তিনি বলেন,আমার প্রশ্ন হচ্ছে সরকারি বিমান অফিস টিকিট দিতে না পারলে এজেন্সি কিভাবে দিতে পারে ? এটা সম্পূর্ণ সিন্ডিকেট করে তারা টাকা হাতিয়ে দিচ্ছে আমাদের কাছ থেকে।
রামু রাজারকুল এলাকার প্রবাসী আবদুল্লাহ বলেন, আমি টিকিট পরিবর্তন করতে চেয়েছিলাম উপলে থাকা সরকারি বিমান অফিস আমার কাছ থেকে ২৬ হাজার টাকা দাবী করেছে। অথচ সরকারি ভাবে সিট পরিবর্তনের জন্য আগে ৪/৫ হাজার টাকা নিত। এখন ২৬ হাজার টাকা বলছে।
টেকপাড়া এলাকার নুরুল আমিন বলেন, দুবাইয়ের বিমানের সিট সময় সময় থাকে। আমি ১২ বছর ধরে নিয়মিত আসা যাওয়া করছি। এখন সিট করতে গেলে বলে নাই। অনেক ঘুরাঘুরির পর ৯৫ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট করেছি। অথচ সেই টিকিট আগে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে করেছিলাম। এভাবে চলতে থাকলে প্রবাসীরা কোথায় যাবে, সরকারের এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
সরজমিনে সরকারি বিমান অফিসে গিয়ে বেশ কয়েক জনের সাথে আলাপ কালে তারা জানান, এখানে সিট কনফার্ম করতে আসলে আগে কোন ঝামেলা হতো না। এখন নানান রকম ঝামেলা তৈরি করে। মোট কথা টাকা ছাড়া কোন কথাই বলেনা।
তাছাড়া তাদের কিছু নির্দিষ্ট দালাল আছে তারা আমাদের বলেছে এখানে মাথা ফাটলেও সিট করতে পারবেন না ঠিকই আমাদের কাছে আসতে হবে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে সরকারি অফিসে না পারলে কিভাবে বাইরের এজেন্সি গুলো পারে।
এখানে মুলত বেশ কয়েকটি এজেন্সি আছে কক্সবাজার এবং ঢাকা অফিসের কিছু কর্মকর্তাদের সাথে তাদের যোগসাজশ আছে তারা মূলত সব সিট আগে কিনে রাখে অথবা বুকিং করে রাখে পরে তারা ৩ গুণ দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে। আসলে সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে চলে গেছে বিমান অফিস।
এভাবে একটা সরকারি অফিস যদি দালালদের নিয়ন্ত্রনে চলে যায় তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে ? তাই এ বিষয়ে দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন প্রবাসীরা।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার বিমান অফিসের ম্যানেজার সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন আমি শুধু না ঢাকা অফিসের জি এম পর্যন্ত কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে পারবে না। তাই কোন মন্তব্য করতে পারছি না।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-