প্রেস বিজ্ঞপ্তি •
গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের চেরাংঘর বাজারে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা একটি নারকীয় হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মোরশেদ আলী নামে এক যুবকের মৃত্যু ঘটে।
ইতিমধ্যে ঘটনার সময় মোবাইলে ধারণকৃত কিছু ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। উক্ত ঘটনায় পিএমখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার আরিফ উল্লাহ কে হয়রানিমূলক আসামি করায় সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী জান্নাতুল নাইমা সুমি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) আছরের আযানের সময় পিএমখালী ইউনিয়নের চেরাংঘর বাজারে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে চিহ্নিত একদল সন্ত্রাসী একটি নারকীয় হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে এমন ঘৃনিত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানান। উক্ত ঘটনায় নিহতের ভাই এড. জাহেদ আলী বাদী হয়ে ২৬জন কে আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। দেশের প্রচলিত আইনে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন আরিফ উল্লাহর পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, অত্যান্ত দু:খ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে, উক্ত মামলায় নিরহ নিরপরাধ, ঘটনার সাথে কোনরূপ সম্পৃক্ততা নেই এমন একজন কে জড়ানো হয়েছে। উক্ত মামলায় ১১ নম্বর আসামি মেম্বার আরিফ উল্লাহ ৯নং ওয়ার্ডের দুই দুই বার নির্বাচিত জনপ্রিয় মেম্বার। যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে কোন রকম একটি অভিযোগ নেই,ছিলনা।
সদ্য অনুষ্ঠিত স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে ৯নং ওয়ার্ডের ’মাইজ পাড়া গ্রামের আবুল কালাম’ আরিফ উল্লাহ মেম্বারের নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ছিল। আবুল কালাম উক্ত নির্বাচনে লজ্জাজনকভাবে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আরিফ উল্লাহর কাছে হেরে যায়। এবং নির্বাচন চলাকালীন আবুল কালামের সাথে আরিফ উল্লাহর বিভিন্ন বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। ওসময় আবুল কালাম নির্বাচনে হেরে যাওয়ার শোক সইতে না পেরে আরিফ উল্লাহ কে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করে যা উক্ত ৯নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের মানুষের জানা।
সদ্য প্রয়াত শহিদ মোরশেদ আলীর পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারের অত্যান্ত ভাল সু-সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এক সময়ের কুখ্যাত ডাকাত ও অস্ত্র মামলার আসামী আবুল কালামের মিথ্যা প্ররোচনায় পড়ে সদ্য প্রয়াত মোরশেদ আলীর পরিবার আমার স্বামী আরিফ উল্লাহ মেম্বারকে উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিতভাবে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে উক্ত মামলায় আসামি করা হয়েছে। ঘটনার দিন আমার স্বামী আরিফ উল্লাহ সকাল থেকে সদরের ভারুয়াখালী ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার কাসেম সাহেবের সাথে সদর উপজেলা অফিসে দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত ছিল। দুপুর ২টার নাগাদ কক্সবাজার শহরের কালুর দোকানস্থ প্রধান সড়কে খুরুশকুল এলাকার ’হাবিবুর রহমান আজাদ’ নামের এক ব্যক্তির দোকানে ব্যবসায়িক আলাপ করতে দেখা যায়। এবং ৩টা ৩৮ মিনিটের সময় হাবিবুর রহমান আজাদের দোকান হতে উঠে আনারস ও স্বাদ নামীয় মিষ্টির দোকান হতে রসমালাই ক্রয় করে।
বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটের সময় কালুর দোকান হতে বাংলাবাজার উদ্দেশ্যে একটি সিএনজি রিজার্ভ করে রওনা দেয় এমন একটি সিসিটভির ফুটেজ আমাদের হাতে রয়েছে। আমার ২য় সন্তান ভুমিষ্ট হওয়াই সন্তানদের নিয়ে আমি ২৫ দিন যাবৎ বাপের নিজ বাড়ি বাংলাবাজারে অবস্থান করছি। সে (আরিফ উল্লাহ) আমার সাথে ইফতার করা ও সন্তানদের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে ৪ টা ৩০ মিনিটের সময় বাংলাবাজার আমার বাপের বাড়িতে পৌছে। যা পার্শবর্তী লোকজন অবগত।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন ঘটনাস্থলের বেশ কিছু মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ ও সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। সেখানে স্পস্ট বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের সময় হত্যাকারীরা প্রয়াত মোরশেদ আলী কে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে এবং এটাও স্পস্ট কারা জড়িত ছিল। বর্তমানে কালুর দোকান হতে চেরাংঘর বাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে কমপক্ষে ১ঘন্টা লাগে যা কক্সবাজারে বসবাসরত সকলে অবগত। অথছ মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে ১১ নং আসামী আরিফ উল্লাহ মেম্বার প্রয়াত মোরশেদ আলীর ’বুকের বাম পার্শ্বে হাতুড়ী দ্বারা আঘাত করিয়া তেথলানো জখম করে’।
আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখলাম, কালুর দোকান হতে চেরাংঘর বাজারে যেতে ১ঘন্টা সময় লাগলে আমার স্বামী আরিফ উল্লাহ মেম্বার ৩টা ৪৫ মিনিটে রওনা দিয়ে ৪টা ২০ মিনিটের ভিতর কিভাবে হত্যাকান্ডে সামিল হল? যদি সে হত্যাকান্ডে সামিল হত প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্নজনের মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও চিত্রে তার ছবি ও নাম প্রকাশ করলনা কেনো? কেনইবা হঠাৎ করে এজাহারে গোপনে তার নাম উল্লেখ করা হল? এতে স্পস্ট নই কি আমার স্বামী আরিফ উল্লাহ মেম্বারকে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে উক্ত মামলায় হয়রানির উদ্দেশ্যে এজাহারভুক্ত করা হয়েছে।
বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা ১১নং আসামীর পক্ষে উক্ত হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, আরিফ মেম্বারের মা নুর জাহান বেগম,ছোট ভাই রহিম উল্লাহ,ছোট ভাই জসিম উদ্দীন,ছোট ভাই সেলিম,খালেদ আশরাপ বাপ্পী,রিহাত, শুশুর আবদুল গফুর, শাশুড়ি রোকেয়া বেগম।
অসহায় আরিফ উল্লাহ মেম্বার পরিবার প্রয়াত শহীদ মোরশেদ আলীর নারকীয় হত্যাকান্ডে জড়িত সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন এবং প্রশাসন যেন সুষ্টু তদন্ত পূর্বক নিরহ নিরপরাধ আরিফ উল্লাহ মেম্বারকে উক্ত মামলা হতে অব্যাহতি দেয় সেই দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি মুঠোফোনে জানান, হত্যাকান্ডটি সেদিন সংঘটিত হলেও মোর্শেদকে হত্যার পরিকল্পনা করছে দীর্ঘদিন ধরে। আরিফ মেম্বার তখন ঘটনাস্থলে ছিলনা তারপরও কেন তাকে আসামী করা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদী বলেন। আরিফ ওই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য এবং হত্যার মুল পরিকল্পনায় তার ইন্দন রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক করে দিয়ে কৌশলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছে সে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-