সমিতিকে দিতে হয় মাসোহারা: উখিয়ায় চলছে ভাড়া নৈরাজ্য!

এম ফেরদৌস, উখিয়া •

উখিয়া রত্নাপালং ইউনিয়নের কোটবাজার টু ভালুকিয়া হারুন মার্কেট সড়কে সিএনজি ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে।

এ সড়কের যাতায়াত পথ ৪ কিলোমিটারের ও কম। সিএনজি দিয়ে যেতে সময় লাগে ৫/৬ মিনিট এতে ভাড়া হিসাবে হাকিয়ে নিচ্ছে ২০ টাকা। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানান ধরণের ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, গতবছর ২০২১ সালে সিএনজি সমিতির একটি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল উখিয়া উপজেলার যাবতীয় সড়কের নির্ধারিত ভাড়ার পরিমান। কোন রোড়ের ভাড়া কত টাকা চাট তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন জনসমাগমে টাঙ্গিয়ে দেওয়া ছিল যাতে মানুষে জানতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখ ছিল যে কোট বাজার টু ভালুকিয়া রোড়ের ভাড়া ১০ টাকা। এর বেশি নিলে কেউ অভিযোগ করলে তার ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। ২০২২ সালে এসে এ নিয়ম ভেংগে চলছে নতুন নিয়মে। যে যার মত সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে যাত্রী হয়রানি করে ভাড়া আদায় করা। দিনের ভাড়া এক রকম রাতের ভাড়া আরেক রকম।

এ সড়কে কোন ধরণের শৃঙ্খলাবোধ নেই। প্রতিদিন যাত্রী হয়রানির ঘটনা অহরহ ঘটে। নানা অজুহাতে অঘোষিতভাবে ভাড়া বাড়াচ্ছে যখন তখন।

ভুক্তভোগী ভালুকিয়া মোশতাক আহমেদ জানান, ভালুকিয়া সড়কে যাত্রীরা ভাড়া নিয়ে অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছে।

প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে শোষণ করে যাচ্ছে এই রোডের ড্রাইভারেরা। কোট বাজার থেকে আসা যাওয়া করে ২০/৩০ টাকার মতো গ্যাস লাগবে সময় মাত্র ৫/৬ মিনিট কিন্তু তারা একবার যাওয়া আসাতে ২০ টাকা করে ২০০ টাকা মতো নিয়ে নিচ্ছে। এমনিতেই সব দ্রব্যমুল্যের দাম বৃদ্ধি হওয়াতে সাধারণ মানুষ কষ্টে জীবন যাপন করছে। তাদের সুযোগ নিয়ে গাড়িওলা ভাড়া দিগুন নেওয়ার কোন যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয় না। এর সামাধাণ কার কাছে? এ বিষয় নিয়ে আমি নিজের ফেইসবুক ওয়ালে পোষ্ট ও করেছিলাম কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছে যথাযথ সমাধান পাইনি।

এক ভোক্তভোগী যাত্রী জানায়, কোট বাজার থেকে হারুণ মার্কেট যেতে সিএনজি নিয়ে সময় লাগে ৫ মিনিট এতে কোন মূলে ২০ টাকা নেয়। দেশে গ্যাস-তেল সব কিছুর দাম বেশি মানলাম কিন্তু তারা দিনের বেলায় ১০ টাকা সন্ধ্যার পর ২০ টাকা এগুলা কোন ধরণের নিয়মনীতি। তাইলে সন্ধার পর কি গ্যাস-তেলের দাম দিগুন হয়? আর দিনের বেলায় আবার কমে যায়..?

আরেক ভুক্তভোগীর পাঠানো তথ্য, কিছুদিন আগে মা’কে নিয়ে গিয়েছিলাম ডাক্তারের কাছে। ফিরতে রাত হয়েছে কোট বাজার এসে ভালুকিয়া রোডে গিয়ে সিএনজি নিয়ে বাড়ির উদ্যশ্যে রওনা দিলাম। হারুন মার্কেটে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে স্বাভাবিক ভাবে দুজনের ভাড়া ৩০ টাকা দিলাম । এতে ড্রাইভার উত্তেজিত হয়ে বাজে একটা কমেন্ট করে বলল টাকা কম হয়েছে আরো দেন। আমি নিশ্চুপ হয়ে ড্রাইভারকে বললাম দুজনের ভাড়া তো ২০ টাকা আমি ১০ টাকা বেশি দিলাম এরপরও এতো কাহিনী কেন ভাই ? সে বলল রাতে ১ জনের ভাড়া ২০ টাকা ২ জনের ভাড়া ৪০ টাকা। আমি তার কথায় বিতর্ক সৃষ্টি না করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। এ সময় আমার পকেটে আর টাকা ও নেই লজ্জায় আমতা আমতা করার সময় পাশের এক ভদ্র লোক বলে উঠল আমি উনার জন্য ১০ টাকা দিচ্ছি তাদের যেতে দিন। পরে আমরা চলে এলাম ।আমার মতো আরো কত যাত্রী এই সড়কে হয়রানির শিকার হচ্ছে হিসাব নেই। ভালুকিয়া রোড়ের ড্রাইভার গুলো এরকম বর্বর নির্যাতনকারী ড্রাইভার।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে বিশেষ করে ফেইসবুকে বিভিন্ন ভাবে ভাড়া নৈরাজ্যের কথা তুলে ধরেছেন ভালুকিয়ার স্থায়ী বাসিন্দারা

ভাড়া বেশি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে এক সিএনজি চালক জানায়, একটি সিএনজি গাড়ি রোডে আসলে অনেক খরচ। সমিতিকে নিয়মিত মাসিক চাঁদা দিতে হয়। যে রোডে গাড়ি চালায় সেই রোডের লাইন ফিস দিতে হয়। না হলে গাড়ি চালানোর জন্য সড়কে যে সমস্যাগুলো আসে সব নিজেদের উপর ডাবল জরিমানা দিয়ে এসব সামাধাণ করতে হয়। আবার তেল গ্যাসের দাম ও বেশি যার কারণে আমরা ভাড়া বেশি নিচ্ছি।

অসংখ্যবার ফোনে যোগাযোগ করে সিএনজি সমিতির সভাপতির সাথে কথা বলায় ব্যর্থ হওয়াতে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সচেতন মহলের দাবি, এ সড়কে দিন আর রাতের কথা না ভেবে নির্ধারিত একটি ভাড়ার মুল্য তালিকা করে গাড়িতে রাখা হউক। এতে জনভোগান্তি অনেকটা কমে যাবে। যখন যেমন ইচ্ছা ভাড়া আদায় করার সুযোগ পাবে না।

আরও খবর