মুহিবুল্লাহ মুহিব •
কক্সবাজার শহরের সিটি কলেজ এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ চলছিল দুইটি গ্রæপের মধ্যে। নিহত রিদুয়ান রিফাত গ্রæপের সক্রিয় সদস্য বলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ছায়া তদন্তে উঠে এসেছে।
গেল ২৮ মার্চ সোহাগ নামে সানী গ্রæপের এক সদস্যের উপর হামলা চালায় রিদুয়ানরা।
সেই হামলার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে সানী গ্রæপের সদস্যরা। ওইদিন সন্ধ্যার পরের সময়টাকে বেছে নেয়া হয়। তারপর দলবদ্ধ হয়ে রিদুয়ানের উপর হামলা চালায় সানির নেতৃত্বে তার গ্রæপের একাধিক সদস্য।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব ও পুলিশের কাছে এসব তথ্য জানিয়েছে সানি গ্রæপের অন্যতম সদস্য ও রিদুয়ান হত্যা মামলার দুই নং আসামী হেরাম আল ছোটন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারের জেষ্ট বিচারকি হাকিম আবুল মনছুরের আদালতে তোলা হয় গ্রেপ্তার হেরাম আল ছোটনকে। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত আবেদনের শুনানী শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গেল ১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার শহরের সিটি কলেজ এলাকা থেকে মামলার দুই নাম্বার আসামী ছোটন ও চট্টগ্রামের ডলমুরিং এলাকার মনসুরাবাদ থেকে ৪ নাম্বার আসামী কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ওই সময় র্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক (ল এন্ড মিডিয়া) বিল্লাল উদ্দিন জানিয়েছিলেন, ২৮ মার্চ হত্যাকান্ডের পর থেকে এ মামলা নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব। প্রাথমিকভাবে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে আসামীরা। তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব ও পুলিশের কাছে আসামী ছোটন দাবি করেন-তাদের গ্যাংয়ের লিডার শহিদুল ইসলাম সানি। এ গ্রæপের সদস্য সোহাগকে মারধর করে রিফাত গ্রæপের রিদুয়ান সিদ্দীকিসহ আরও কয়েকজন। তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তিও করান স্থানীয় কাউন্সিলর শাহাব উদ্দিন সিকদার।
কিন্তু সোহাগের হামলাটা মেনে নিতে পারেনি সানি গ্রæপের সদস্যরা। কারণ নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এসেছে গ্রæপের লোককে মেরে দিয়েছে তারা। ওইদিন সন্ধ্যার পরে রিদুয়ানকে টার্গেট করি। তাকে প্রথমে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। সে না চাওয়ার কারণে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাত করে আমরা পালিয়ে যায়। তবে কার হাতে ছুরি ছিল বা কে ছুরি চালিয়েছে তার ষ্পষ্ট কিছু বলতে পারেনি ছোটন।
আসামী ছোটনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, আসামী ছোটনের বিরুদ্ধে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত শুনানী শেষে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু তথ্য দিয়েছে ছোটন। হত্যাকান্ডটির পরিকল্পনার আরও গভীরের তথ্যের প্রয়োজনে তাকে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। আশা করছি শীঘ্রই বাকি আসামী ও মূল রহস্য উন্মোচন হবে।
গেল ২৮ মার্চ সোমবার সন্ধ্যায় ছুরিকাঘাত করে কলেজছাত্র রিদুয়ানকে গুরুতর আহত করা হয়। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কলেজছাত্র রিদুয়ান সিদ্দিকী। সে সাহিত্যিকা পল্লী এলাকার আবু বক্কর সিদ্দীকির ছেলে।
৩১ মার্চ বুধবার রাতে নিহত রিদুয়ান সিদ্দিকীর মা বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন (যার নং-৮৯)। এ মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ্য ও অজ্ঞাত আরও ৫ জনসহ ১৯ জনকে আসামী করা হয়। প্রধান আসামী করা হয় কিশোর গ্যাং লিডার শহিদুল ইসলাম সানিকে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-