আন্তর্জাতিক ডেস্ক •
গুরুতর অসুস্থ মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন হতদরিদ্র এক বাবা। ভর্তির কিছুক্ষণ পরেই মারা যান তার মেয়ে। মেয়ের মরদেহ গ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো গাড়ি না পাওয়ায় নিজেই মেয়ের মরদেহ কাঁধে তুলে নেন। এরপর পাড়ি দেন ১০ কিলোমিটার পথ।
এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ছত্তিশগড়ের সরগুজায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, ছত্তিশগড়ের সরগুজার আমডালা গ্রামের বাসিন্দা ঈশ্বর তাঁর সাত বছরের মেয়ে সুরেখাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শুক্রবার (২৫ মার্চ) ভোরে লক্ষ্মণপুরের সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে এসেছিলেন। কিছু সময় পরে সেখানেই সুরেখা মারা যায়। মেয়ের মরদেহ গ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো গাড়ি পাননি ঈশ্বর। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরে তিনি কাঁধে মেয়ের মরদেহ তুলে ১০ কিলোমিটার দূরে আমডালার উদ্দেশে রওনা হন।
মরদেহ নিয়ে হাটার একটি ভিডিওটি শেয়ার করেছে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই। ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর নড়েচড়ে বসে ছত্তিশগড় সরকার। ইতোমধ্যে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ওই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিংহদেও বলেন, ‘আমি ভিডিওটি দেখেছি। খুবই মর্মান্তিক। এ বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (সিএমএইচও)-কে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের উচিত ছিল গাড়ি না আসা পর্যন্ত মৃতের পরিবারকে অপেক্ষা করতে বলা।’
ওই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে শনিবার (২৬ মার্চ) লক্ষ্মণপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক বিনোদ ভার্গব বলেন, ‘মেয়েটির অক্সিজেনের মাত্রা খুব কমে গিয়েছিল। ৬০-এর কাছাকাছি নেমে যায়। তার বাবা-মা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে সে প্রবল জ্বরে ভুগছিল। আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করেছিলাম। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হয়। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ সে মারা যায়।’
ভার্গবের দাবি, সুরেখার মরদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ লক্ষ্মণপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরকারি গাড়ি এসেছিল। কিন্তু তার আগেই ঈশ্বর মেয়ের মরদেহ কাঁধে তুলে গ্রামের উদ্দেশে রওনা হন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-