আবদুল্লাহ আল আজিজ, কক্সবাজার জার্নাল •
কক্সবাজারের উখিয়ায় দীর্ঘদিনের বসতঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় নারী-শিশুসহ ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
২১ মার্চ (রবিবার) উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মোহাম্মদ শফির বিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুতর আহতরা হলেন, মৃত নুর আহমদের পুত্র কবির আহমদ (৬৫) ও কবির আহমদের স্ত্রী খুরশিদা বেগম (৪৮) এবং ছেলে সালাহ উদ্দিন (১১)।
খবর পেয়ে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, গুরুতর আহত কবির আহমদ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি রিজার্ভ জায়গায় ঘর করে ভোগদখল করে আসছিলো। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী ও চিহ্নিত ভূমিদস্যু মৃত ইসলাম মিয়ার পুত্র আবদু সালামের ঐ জায়গায় কুদৃষ্টি পড়ে। তারই সূত্র ধরে আজ সকালে সোনারপাড়া এলাকার আবদু সালামের পুত্র তারই মেয়ের জামাই রাসেল ও তারই নেতৃত্বে বহিরাগত ৩৫-৪০ জনের একটি ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় বৃদ্ধ কবির আহমদ ও স্ত্রী সন্তান বাধা দিলে তাদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে তারা।
এসময় বৃদ্ধ কবির আহমদের বাড়িটিও গুড়িয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কবির আহমদের মেয়ে হালিমা আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে সন্ত্রাসী বাহিনীর কর্তৃক ভেঙ্গে দেওয়া বাবার স্বপ্নের বাড়ি দেখিয়ে বলেন, ছোট বেলা থেকে এই বাড়িতেই বড় হয়েছি এবং এই ঘর থেকেই আমার বিয়ে হওয়ার সুবাধে আমি শ্বশুড় বাড়িতে থাকি। আজ প্রতিবেশীরা আমাকে ফোন করে জানালে এসে দেখি আমার মা-বাবা ও ভাই লাশের মত পড়ে আছে এবং বাবার পা ভেঙ্গে গেছে।
এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় সন্ত্রাসী আবদু সালাম, তারই জামাই রাসেল, নুরু, ছৈয়দ নুর ভাড়াতে সন্ত্রাসী এনে আমাদের বসতঘর গুড়িয়ে দেয়।
তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য প্রশাসনের ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ভুক্তভোগীর পরিবারের নুরুল ইসলাম বলেন, আমার বোন ও তার জামাই ৩০ বছর ধরে এ ঘরে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু স্থানীয় ভূমিদস্যু আবদু সালাম গত এক বছর ধরে এ জায়গায় কুদৃষ্টি দিলে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে বিচারধীন ছিলো। কিন্তু ভূমিদস্যু তা উপেক্ষা করে তার সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের নিয়ে অতর্কিত এ নারকীয় হামলা চালায়। এতে আমার বোন জামাই ও তার স্ত্রী সন্তান গুরুতর আহন হন। বর্তমানে তারা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অন্যদিকে, হামলাকারী ও অভিযুক্তদের সাথে কথা বলতে সরেজমিনে গিয়েও তাদের হদিস মেলেনি।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইনানী পুলিশ ফাড়ির উপপরিদর্শক এস আই অলিউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-