ইমরান আল মাহমুদ,উখিয়া:
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপহরণ ও মাদক কেনাবেচার মতো ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে কক্সবাজারের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত রোহিঙ্গা ঢলের চার বছর পেরিয়ে গেলেও কমেনি অস্থিরতা। দিন দিন অপরাধ অপকর্ম বেড়েই চলেছে ক্যাম্পে।
উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে জানা যায়,দিনের মধ্যে ক্যাম্প যতটা নিরাপদ মনে হয় রাতে ততটা নিরাপদ নয়। অন্ধকার হলেই বেড়ে যায় দুষ্কৃতকারীদের সংখ্যা।
উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন(এপিবিএন) এর তিনটি ব্যাটালিয়ন। ক্যাম্পে ইয়াবা,অস্ত্র সহ নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এমনটি জানিয়েছেন উখিয়ার ক্যাম্পে নিয়োজিত ৮এপিবিএন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(মিডিয়া) মো. কামরান হোসেন।
তিনি জানান,ক্যাম্পে শৃঙ্খলা রক্ষায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ৮এপিবিএন বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার ক্যাম্প-১৬ শফিউল্লাহকাটার আওতাধীন হাকিমপাড়া ক্যাম্প-১৪ এর হেড মাঝি,ব্লক হেডমাঝি,সাব-মাঝি, ইমাম-মুয়াজ্জিন ও স্বেচ্ছায় পাহারাদাদের সাথে পাহারা ব্যবস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় স্বেচ্ছায় পাহারা দেওয়ার জন্য রাজি হওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে বাঁশি বিতরণ করা হয় বলে জানান।
তিনি আরও জানান,সভায় উপস্থিত শরণার্থীদের সামনে কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যার মধ্যে রাতে জালের মতো বিস্তৃত স্বেচ্ছা পাহারা ব্যবস্থা যেনো সবসময় দৃশ্যমান থাকে এবং ভোর ৬টা পর্যন্ত প্রতিটি ব্লকে নিয়োজিত থাকে তা নিশ্চিত করা হয়। প্রতিটি সাব-ব্লকে সর্বনিম্ন ৫ থেকে ১০ জন এবং ক্যাম্পের প্রবেশ পথে সর্বনিম্ন ২৫ থেকে ৩০ জন স্বেচ্ছায় পাহারাদাররা সবসময় সর্তক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করে তা নিশ্চিত করা। সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে সঠিক তথ্য দিয়ে পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করা জন্য উপস্থিত রোহিঙ্গাদের দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়। ক্যাম্প এলাকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপহরণ ও মাদক কেনাবেচা না হয় সে সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দেয়া। ক্যাম্পে বাঙালীদের সাথে কলহ বা বিরোধে না জড়ানো। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকার জন্য বলা হয়।
এসময় উপস্থিত রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় পাহারা ব্যবস্থাকে সাধুবাদ জানায় এবং এ ব্যবস্থার পরিপেক্ষিতে ক্যাম্পে ৯৫ শতাংশ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে তারা(রোহিঙ্গারা) অভিমত ব্যক্ত করে।
এ সময় দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন ৮এপিবিএন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম,সহকারী পুলিশ সুপার মো.শাহ আলম, পুলিশ পরিদর্শক মো.ইলিয়াছ খান সহ অন্যান্য পুলিশ অফিসারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-