কক্সবাজারে রোহিঙ্গা অপরাধী এনে জমি দখলের অভিযোগ; রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার •

কক্সবাজার শহরের টিএন্ডটি পাহাড়স্থ বিজয় নগরে রোহিঙ্গা অপরাধী এনে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় অপরাধীদের তত্বাবধানে রোহিঙ্গারা এসে রাতের আধারে ঘর তুলে নিরাপদে অবস্থান করছে। দখলের এ উৎসবে লোক অনুযায়ী বন্টন করা হয় কর্ম এবং অপরাধের ধরণ অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে টাকা।

ফলে বাড়ছে চুরি-ছিনতাই, জমি জবর দখল ও ইয়াবাপাচারসহ নানা অপরাধ কান্ড। পুলিশি অভিযান ও প্রশাসনিক নজরদারী না থাকায় এসব অপরাধীদের দৌরাত্ম্য ক্রমে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন তারা। এসব বিষয় দাবি করে শনিবার (১২ মার্চ) রাতে কক্সবাজার সদর থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি-৮৪১/২০২২) করেছেন বিজয় নগরের অধিবাসী এম আমান উল্লাহ।

সাধারণ ডায়রিতে তিনি উল্লেখ করেন, কক্সবাজার পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের কলাতলী টিএন্ডটি রোড বিজয়নগর এলাকায় নিজ মালিকানাধীন ও ভোগদখলীয় জমিতে শহরের চিহ্নিত অপরাধী মইনুল হোসেন রোহিঙ্গা অপরাধী জাফর আলম, হামিদা আকতার, জেসমিন ওরফে মানতলাসহ ১৫-২০জনকে এনে শনিবার রাতের আঁধারে অস্থায়ী ঘর তৈরী করে।

এসব রোহিঙ্গারা উখিয়ার জামতলী ক্যাম্প-১৬, ব্লক-২, (মাঝি নূর মোহাম্মদ)’র বসবাসকারি। তারা পুরোনো রোহিঙ্গা হিসেবে আগে থেকেই নানা অপরাধের সাথে জড়িত ছিলো। ক্যাম্পে গেলেও শহর এবং নানা এলাকার স্থানীয় অপরাধীদের সাথে তাদের যোগাযোগ ভালো রয়েছে। সেই সূত্রেই মইনুল হোসেন এসব রোহিঙ্গাদের ভাড়ায় এনে আমার জমি দখলে নিতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, মইনুল পরের জায়গা জবর দখলকারী প্রকৃতির লোক ও চিহ্নিত অপরাধী। দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে অপরাধ করে বেড়ানো তার স্বভাব। ঝিলংজা (কক্সবাজার পৌর এলাকা), মৌজার আর, এস খতিয়ান-১৪৪৭/৪৩২ এর আর, এস দাগ-৮০০১ এবং বিএস ২০১৬৩ নং দাগের ৫ শতক জমি দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্তী মামলা নং-১৬/৯৬-৯৭ মূলে প্রাপ্ত ভোগদখলীয় সম্পত্তি। উক্ত জায়গা সংক্রান্তে মহামান্য হাইকোর্টে মামলা নং-১০৩৫৪/১৮ এবং কনটেম্পট পিটিশন নং-৬৫/২০২০ চলমান আছে।

কিন্তু মহেশখালীর কালারমারছড়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মইনুল হোসেন জমিটি তাকে ছেড়ে দিতে বিভিন্ন হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার তার অপরাধী বাহিনী দিয়ে গায়ের জোরে জমিটি জবর দখলের অপচেষ্টা চালায়। বাঁধা পেয়ে চলে যাবার সময় অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে। আমার জমির কিছু দূরে তার দখলীয় অন্য একটি ঘরে রোহিঙ্গাদের জড়ো করে রাখা হয়েছে। যেকোন সময় তাদের দিয়ে হত্যা কিংবা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ সৃষ্টি করতে পারে বিধায় প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, শহরের চিহ্নিত অপরাধীরা নিজেদের ফায়দা লুটাতে কৌশলে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে। নিজেরা আড়ালে থেকে রোহিঙ্গাদের দিয়ে করানো হয় চাঁদাবাজি, খুন, চুরি-ছিনতাই, মাদক পাচারসহ নানা অপরাধ। মইনুল এক সময়ের দুর্দান্ত ছিনতাইকারী। তার বিরুদ্ধে চুরি-ছিনতায়ের অভিযোগে একাধিক মামলা চলমান। আগে নিজে ছিনতাই করলেও এখন ছিনতাইকারীদের নিয়ন্ত্রণ করেন কলাতলী ডলফিন মোড়স্থ ওর্য়াল্ডবীচ রিসোর্টে বসে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মইনুল হোসেন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এসব কিছু আমি করিনি, তবে আমারও চাওয়া যারা অভিযোগ করেছে তাদের সাথে ভুল বুঝাবুঝিটা সমাধান হউক।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, সাধারণ ডায়রি নেয়া পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। দখলে ব্যবহার করা রোহিঙ্গা নারীরা পুলিশের সাথেও বাজে আচরণ করেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা ফিরে এসে জানিয়েছেন। ###

আরও খবর