রাজু দাশ, চকরিয়া •
নজরুলের এই বিখ্যাত গানটি গোটা বাঙ্গালী জাতিকে মনে করিয়ে দেয় ফুলকে ভালবাসার কথা।আর মনে করিয়ে দেয় ১৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবসের কথা। যে দিনটিতে প্রিয়ার খোপায় ভালবাসার মানুষটি পড়িয়ে দেয় একটি লাল গোলাপ। আর ভালবাসা দিবস ও বসন্তবরণে ফুল ছাড়া কখনো পালন করা সম্ভব নয়। তাই এ ফুলের কদরো বেশী। এদিনে ফুল চাষিদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যায়।
১৪ ফেব্রুয়ারী ভালবাসা দিবস আর বসন্ত বরণ কে সামনে রেখে চকরিয়া উপজেলা বরইতলী ইউনিয়নে দৃষ্টিসীমার পুরোটা জুড়েই যেন সবুজের সমারোহ। দিগন্ত-বিস্তৃত মাঠে ফুলের সমারোহ যেন স্বর্গীয় সৌন্দর্য নিয়ে এসেছে। জমিতে সারি সারি গোলাপ, রজনীগন্ধার গাছের সারি। সৌন্দর্য পিয়াসু ফুল প্রেমিক মানুষের মনের আশা মিটাতে কক্সবাজার জেলায় অনেক জায়গায় ফুল বাগান গড়ে উঠলে ও বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে এগিয়ে গোলাপ নগর’ খ্যাত বরইতলী।
সরেজমিন ফুলচাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের গোলাপ নগর খ্যাত কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের শতাধিক বাগান থেকে প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গোলাপ ও রজনীগন্ধা ফুল সরবরাহ করা হয় পাইকারী আড়তদারদের কাছে।
বিশেষ বিশেষ দিবস গুলোতে এসব বাগানের ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গত আড়াই দশক ধরে এখানকার চাষিরা একমাত্র অবলম্বন হিসেবে ফুলচাষ করে আসছেন।
আরো জানান, এবার প্রাকৃতিক পরিবেশ ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক থাকায় বেশ খুশি মনে ফুল চাষ করা হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারো ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে চকরিয়া ফুল সারাদেশেই সুবাস ছড়াবে।
এদিকে অনেকে প্রিয়জনদের ফুল উপহার দেন। তাই ফুলের দোকানে কদর বাড়ে। এ জন্য আগের দিনই ব্যস্ত হয়ে ওঠে চিরিংগা ফুলের বাজার। রবিবার সন্ধ্যায় শহরের দেখা গেছে, ফুলের দোকানগুলোতে ভিড়। নির্ধারিত দোকানের বাইরে রাস্তার পাশে সাজানো হয়েছে গোলাপ, রজনীগন্ধা, লিলি, কাঠমালতি, অর্কিডসহ অসংখ্য ফুল সংগ্রহ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ফুল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর ভালবাসা দিবসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়। এবারো ভাল বেচাকেনা হবে বলে তিনি মনে করছেন। ভালবাসা দিবসে প্রতি পিচ গোলাপ ৫০ টাকা, রজনী ১০ টাকা, ভুট্রা রজনী ১৫ টাকা করে বিক্রয় হবে। তিনি আরো জানান, এই দিনে সব চেয়ে গোলাপ ফুলটি বেশি বেচাকেনা হয় এবং গোলাপ ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার পিচ ফুল বিক্রয় হবে বলে তিনি আশাবাদী।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম নাসিম হোসেন বলেন, বরইতলী ইউনিয়নে চলতি বছর ৬৬ হেক্টর জমিতে গোলাপ, ২৮ হেক্টরে গ্লাউডিওলাস ও আরও ১৬ হেক্টরসহ মোট ১১০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ করছেন পাচঁ শতাদিক চাষি। এবারের ভালোবাসা দিবসসহ সবকটি দিবসে ফুল বিক্রিও ভালো হবে। এতে আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হবেন চাষিরা।
তিনি আরো বলেন, উপজেলা প্রশাসন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যাগে বরইতলী ইউনিয়ন ফুল বাগনকে পর্যটন এলাকায় হিসাবে গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ফুল চাষিদের সাথে আলোচনা হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-