বিশেষ প্রতিবেদক •
এবার কক্সবাজার ডিজিটাল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুতুড়ে বিল বানিয়ে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে অতিরিক্ত বিল ডাক্তারের জন্য নেওয়া হয়েছে। আর ডাক্তার বলছে এসব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিষয় আমার বিল না। একজন অপরজনকে দুষছেন। দায় নিতে রাজি নয় কেউ।
অন্যদিকে অতিরিক্ত বিল আদায়ের একাধিক অভিযোগের পরেও তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলেই যেন দায় সারছেন কক্সবাজার সিভিল সার্জন।
অভিযোগ আছে, ডাক্তার ছাড়াই নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে শুধু ফোন কলের ফি হিসেবে ডাক্তারের বিল বানিয়ে ৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন কক্সবাজার ডিজিটাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঈদগড় থেকে চিকিৎসা নিতে আসা ছমিরা নামের এক ভুক্তভোগী জানান, ৩ জানুয়ারী ভোর সাড়ে পাঁচটায় ডেলিভারির জন্য ডিজিটাল হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে কোন ডাক্তার না থাকাই নার্স আর ধাত্রীর মাধ্যমে স্বাভাবিক ডেলিভারী সম্পন্ন হয়। এরপর ছাড়পত্রের জন্য ক্যাশ কাউন্টারে বিল জমা দিতে গেলে হাসপাতালের চার্জ বাবদ ২ হাজার ২শ টাকা, এবং ডাক্তারের সাথে ফোনে কথা বলার জন্য ১ হাজার এবং ফোনে পরামর্শের ফি ধরা হয় ৮ হাজার টাকা।
ডাক্তার ছাড়াই স্বাভাবিক বাচ্চা প্রসব করার পরেও কেন এত টাকা ডাক্তারের বিল আসল জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ কোন সদুত্তর দেন নি। বরং টাকা না দিলে ছাড়পত্র দিবে না বলে জানায় তারা। এক পর্যায়ে ডাক্তারের সাথে কথা বললে ডাক্তার বলেন আমার বিল তো ১ হাজার, ৮ হাজার তো আমার বিল না। আপনারা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। এরপর হাসপাতালের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিলে আমাদের কোন হাত নেই এগুলো সম্পূর্ণ ডাক্তারের টাকা। আপনি চাইলে ২ হাজার টাকা কম দিতে পারবেন। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। এইভাবেই কেঁদে কেঁদে বর্ণনা দিলেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিজিটাল হাসপাতালের ডাক্তার ইফফাত সানিয়া জানান, আমি ডেলিভারির সময় ছিলাম না। তারপরেও আমার ফোন কল হিসেবে এক হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু ৮ হাজার টাকার ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। হয়তো তা হাসপাতালের খরচ বাবদ নিয়েছে। এটা কর্তৃপক্ষের বিষয়।
অতিরিক্ত বিল আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার ডিজিটাল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোয়েব ইফতেখার জানান, আমাদের হাসাপাতালের বিল বাবদ ২২শ টাকা আমরা নিয়েছি। অতিরিক্ত ৮ হাজার বিলটা ডাক্তারের জন্য নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই বিলের ব্যাপারে তো ডাক্তার কিছুই জানে না বলেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যাবস্থাপনা পরিচালক জানান, আপনাকে হয়তো বলেছে কিন্তু যদি এই বিলটা ডাক্তারকে না দিই, ডিউটিতে যিনি ছিলেন তার বেতন থেকে কেটে নিবে।
সী সাইড হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল এবং সর্বেশেষ ডিজিটাল হাসপাতালের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিল আদায়ের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা: মাহাবুবুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট কোন অভিযোগ না পেলে ব্যাবস্থা নেওয়া সম্ভব না। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-