ছেলে তুমি কার, বাবার না শ্বশুরের?

অনলাইন ডেস্ক :

কত কিছুই না ঘটে আমাদের চারদিকে। কত আজব ঘটনার সম্মুখীন হই আমরা। এমনই এক আজব ঘটনা ঘটেছে এক ছেলেকে নিয়ে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে- ছেলে কার? বাবার নাকি শ্বশুরের?

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ঠিক তাই হয়েছে চট্টগ্রামে। প্রবাস ফেরত ছেলেকে নিয়ে দুইপক্ষের টানাটানি, পুলিশের হস্তক্ষেপ। সবশেষে টাকার জোরে শ্বশুরের জয়। এখন অসহায় বাবা আর বোনের সম্বল শুধু কান্না। এ যেন এক থ্রিলারের মঞ্চায়ন।

জানা গেছে, ওমান প্রবাসী এই যুবকের নাম রকি। বাড়ি কুমিল্লায়। দুই বছর আগে ভালোবেসে রীনা আক্তারকে বিয়ের পর ফের চলে যান ওমানে। মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে নামার পরই নাটকীয় ঘটনার সূত্রপাত। রকিকে নিয়ে শুরু হয় বাবা আর শ্বশুর বাড়ির লোকদের টানাটানি। বাবার বাড়ি নাকি শ্বশুর বাড়ি, কোথায় যাবেন রকি? এ দ্বন্দ্ব গড়ায় পুলিশ পর্যন্ত।

উভয়পক্ষই যান চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায়। সেখানেই রকি সিদ্ধান্ত জানান, শ্বশুর বাড়িতেই যাবেন তিনি। স্ত্রী রীনাও যেতে চান না রকিদের ঘরে। এমন সিদ্ধান্তের পর তৈরি হয় আরেক দৃশ্যপট। এবার ছেলের সামনে দাঁড়ান অসহায় বাবা। অবাধ্য সন্তানকে বিদেশ পাঠাতে গিয়ে মেয়ের কাছ থেকে ধার নেয়া টাকা ফেরত চান।

প্রবাসী রকির বাবা আবদুল মান্নান বলেন, ছেলে বিদেশে যাওয়ার সময় টাকা পয়সা আমি দিছি এখন ছেলে বাপ চেনে না, মা চেনে না, ভাই চেনে না, কাউকেই চেনে না। একমাত্র সে কাকে বিয়ে করেছে তাকেই চেনে সে।

প্রবাসী রকির বড় বোন বলেন, আমরা ওকে গাড়ি নিয়ে এসেছি নিতে, ও আমাদের সঙ্গে যাবে না, শ্বশুরবাড়ি যাবে। ও আমাদের চিনে না। বাপ, মা ভাই-বোন চিনে না।

রকির শ্বশুরপক্ষ শর্ত জুড়ে দেয় লেনদেন হবে স্ট্যাম্প করে। পুলিশের উপস্থিতিতে, রকির বাবার হাতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেক তুলে দেয় শ্বশুরপক্ষ। এরপর স্ত্রীর হাত ধরে চলে যায় রকি।

পতেঙ্গা থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, রকির বাবা-বোন ও স্ত্রী-শ্যালক তাকে নেয়ার জন্য আসছে। তাদের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা এসে আবার চলে গেছেন। কেউ কারোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি।

জন্মদাতা বাবার প্রতি সন্তানের এমন নির্দয় আচরণ সইতে পারেননি আদরের বোন। তার আহাজারি হৃদয় ছুঁয়ে গেছে উপস্থিত সবার।

আরও খবর