মানব সমাজে মদের প্রচলন বহুকাল থেকেই। কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা মদকে হারাম অর্থাৎ নিষিদ্ধ করেছেন। কারণ ইতিহাসে আছে বহু কীর্তিমান জাতির বিপর্যয় ডেকে এনেছে মদ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলুন, উভয়ের মধ্যে আছে মহাপাপ ও মানুষের জন্য উপকার। কিন্তু তাদের পাপ উপকার অপেক্ষা বেশি।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২১৯)
মুসলমানদের জন্য মদ ইসলামী শরিয়তে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোরআন ও হাদিসের একাধিক বর্ণনায় মদপান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া, পূজার বেদি ও ভাগ্যনির্ণায়ক শর হচ্ছে শয়তানের অপবিত্র কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।’ (সুরা : মায়িদাহ, আয়াত : ৯০)
মদপানকারী ও মদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর অভিশাপ মদের ওপর, তা পানকারীর ওপর, যে পান করায় তার ওপর, যে বিক্রি করে তার ওপর, যে তা নিষ্কাশন করে এবং যার আদেশে নিষ্কাশন করে তার ওপর আর যে ব্যক্তি তা বহন করে এবং যার কাছে পৌঁছে দেয়, সবার ওপর।’ (সুনানে আবি দাউদ)
এ ছাড়া মদপানে রয়েছে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি। তার মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত মদপানে ফুসফুসের স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য নষ্ট হয়। শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। যেমন নাইট্রিক অক্সাইড শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করা ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া থেকে শ্বাসতন্ত্রকে রক্ষা করে। কিন্তু মদ পান করলে শরীরে এই বর্ণহীন গ্যাস নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদনের পরিমাণ কমে যায়।
‘চেস্ট’ জার্নালে প্রকাশিত হয় গবেষণা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গবেষণার প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের লোয়োলা ইউনিভার্সিটি শিকাগো স্ট্রিটচ স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের সহকারী অধ্যাপক মাজিদ আফসার বলেন, মদ ফুসফুসের মধ্যকার স্বাস্থ্যকর ভারসাম্যকে নষ্ট করে।
২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সংগ্রহ করা ১২ হাজার ৫৯ জন ব্যক্তির তথ্য পর্যালোচনা করেন গবেষকরা।
এছাড়া মদ পানের পর ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত একজনের রক্তে এর উপস্থিতি থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাস ও মুত্রে ১২-২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত এবং চুলে সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত এর উপস্থিতি থাকে। (তথ্যসূত্র: রয়টার্স)
গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ নামের বৈশ্বিক উদ্যোগের গবেষণা থেকে জানা গেছে, মদ মানেই ক্ষতি। মদের কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। মদ পান করলে ক্ষতি হবেই। গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ নামের বৈশ্বিক উদ্যোগের গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে। আমেরিকার ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিকস এই বৈশ্বিক উদ্যোগের প্রধান কার্যালয় হিসেবে কাজ করেছে। গবেষণায় অর্থায়ন করেছে আমেরিকার বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। (তথ্যসূত্র: পার্সটুডে)
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-