কক্সবাজারে সাংবাদিক লাঞ্ছিতের ঘটনায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সেই এসআই প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক •

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ছবি তুলতে গিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি আবদুল আজিজ লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সেই এসআই আব্দুল মান্নানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত কমিটি গঠন করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান স্যারকে অবহিত করার পরপরই তাকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে একটি তদন্ত কমিটি গঠন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে পেশাগত দায়িত্বপালন করার সময় সাংবাদিক আবদুল আজিজকে ট্যুরিস্ট পুলিশের এসআই আব্দুল মান্নান ধাক্কা নিয়ে মোবাইল কেড়ে নেন। এ সময় ছবি তোলায় তাকে লাঞ্ছিত করা হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বৈশাখী টিভির কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি নেছার আহমদ বলেন, বিকালে সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে আসেন কয়েকজন বিদেশি পর্যটক। তাদের দেখে সাংবাদিকদের ছবি তুলে ইতিবাচক সংবাদ করার অনুরোধ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ। তখন সাংবাদিকরা পর্যটকদের ছবি তুলছিলেন। তাদের সঙ্গে ছবি তুলছিলেন আবদুল আজিজও। তাকে ছবি তুলতে দেখে দৌড়ে এসে ধাক্কা দেন সৈকতে দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক আব্দুল মান্নান। তাকে লাঞ্ছিত করে হাতের মোবাইলটি কেড়ে নেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

আবদুল আজিজ জানিয়েছেন, ‘পর্যটকদের ছবি তোলার সময় আমাকে লাঞ্ছিত করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এসআই আব্দুল মান্নান। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পর্যটকদের ছবি তোলা যাবে না। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অনুরোধে বিদেশি পর্যটকদের ছবি তুলছি, জানানোর পরও তিনি আজেবাজে কথা বলে মোবাইল নিয়ে যান। পরে মোবাইলটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদের কাছে জমা দেন। লাঞ্ছিতের বিষয়টি ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে জানালে মোবাইলটি আমাকে বুঝিয়ে দেন। সেই সঙ্গে এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।’

ওই সময় মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এসআই আব্দুল মান্নানের কাছে এমন আচরণ আমরা প্রত্যাশা করিনি। কেন তিনি এমন কাজ করেছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ জন্য আমি লজ্জিত। এ ঘটনায় আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’

ঘটনার পর ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দফতরের গণমাধ্যম শাখার পুলিশ সুপার ইব্রাহিম খলিল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। মূলত মাস্ক পরে থাকার কারণে চিনতে না পারায় সাংবাদিকের মোবাইলটি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ওখানে বেশ কয়েকজন বিদেশি পর্যটক ছিলেন। মূলত মাস্ক পরে থাকায় চিনতে না পারায় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আরও সচেতনতার সঙ্গে কাজ করার জন্য জেলা ট্যুরিস্ট পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও খবর