কালেরকন্ঠ :
কক্সবাজারে পরীক্ষা ছাড়াই আদালতে জিম্মায় থাকা একটি সিএনজির ফিটনেস সনদ, কর পরিশোধ সনদ ও রেজিস্ট্রেশন সনদ দিয়েছে বিআরটিএ। নিয়মকানুন না মেনে অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে ওই গাড়ির সনদ সরবরাহ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে আদালতে।
এ কারণে বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালককে সাত কার্যদিবসের মধ্যে সশরীরে আদালতে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন বিচারক। বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকী ওই আদেশ দেন।
বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আদেশের কপি কেন পাঠানো হবে না এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না- এ মর্মে শোকজ নোটিশও দিয়েছেন কক্সবাজারের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে উখিয়া থেকে ৩ হাজার ইয়াবাসহ মহিন উদ্দিন নামে এক সিএনজি মালিক ও চালককে আটক করে পুলিশ। ওই সিএনজিতে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় পাওয়া যায় ইয়াবাগুলো। এ ঘটনায় মহিন উদ্দিনকে আসামি করে উখিয়া থানায় ৬৮/১৯ মামলাটি লিপিবদ্ধ হয়।
ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃতে সিএনজিটি তখন থেকে আদালতের জিম্মায়। একই বছরের ১২ মার্চ জনৈক আবু নোমান সিএনজিটি নিজের দাবি করে আদালতের কাছে জিম্মা চান। আদালত তখন মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেন। তদন্ত কর্মকর্তা বিআরটিএ কক্সবাজারের কাছে প্রতিবেদন চান। এরই প্রেক্ষিতে সেই বছরের ৮ এপ্রিল জব্দ সিএনজিটির রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস সনদ নেই বলে আদালতে প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা। যেখানে বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক উথোয়াইনু স্বাক্ষরিত একটি সংযুক্তি ছিল। তখন আদালত সিএনজিটি আর জিম্মা দেননি।
সিএনজিটি মহিন উদ্দিনের কাছ থেকে এ বছরের ১৫ জুলাই কিনেছে দাবি করে ৪ নভেম্বর তার জিম্মা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন ফজল আহমদের ছেলে মো. ইউনুছ। সঙ্গে তিনি সংযুক্তি হিসেবে সিএনজটির ফিটনেস সনদ, রেজিস্ট্রেশন সনদ ও কর পরিশোধের কাগজপত্র দেন। যেগুলো বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক উথোয়াইনু চৌধুরী স্বাক্ষরিত।
কক্সবাজারের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশেক ইলাহি শাহজাহান নূরী বলেন, ইউনুছের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত সব নথি পর্যবেক্ষণ করেছে। এতে প্রতীয়মান হয়েছে যে ৩ হাজার ইয়াবাসহ আদালতের জিম্মায় থাকা জব্দ সিএনজিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই বিআরটি অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে সনদ সরবরাহ করেছে। এ কারণে বিআরটিএ সহকারী পরিচালককে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সশরীরে আদালতে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন বিচারক।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-