হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া •
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া সদর ৪ নং রাজাপালং ইউনিয়নের ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাদমান জামী চৌধুরী অভিযোগ করেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আমার প্রচারণায় বাধা-প্রদান করা হচ্ছে।
বিশেষ করে ৪,৫,৬,৭,৮ এই ওয়ার্ডগুলোতে আমার পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছে। যারা আমার জন্যে ভোট চাইতে য়ায় তাদেরকে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে।
২০ থেকে ২৫ জন ফলিয়া পাড়া থেকে বের হয়ে আমার নেতাকর্মীদের চার দিকে ঘিরে ফেলে। ইয়াবা ও ডাকাতি মামলার আসামীরা হোন্ডা নিয়ে এসে ভয় দেখাচ্ছেন। ডেইল পাড়া, দরগাবিল,চাকবৈটা এসব এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তবর্তী হওয়ায় ভোটের দিন বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে।
নৌকা প্রতীকের ভগ্নিপতি আলমগীর ফরিদের সহযোগীতায় কক্সবাজারের ক্রাইম জোন খ্যাত মহেশখালী থেকে চিহ্নিত ডাকাত এবং সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে সেসব এলাকায় আমার নেতা কর্মীদের উপর হামলা করে উল্টো মামলা করবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। আমি নিজেও সঙ্কিত।
১ নভেম্বর (সোমবার) বেলা ১২ টায় উখিয়া প্রেস ক্লাবের হল রুমে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বিভক্তি ছড়িয়ে পড়ছে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে। সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি আমাকে ছোট ছেলে বলে হেয় করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমি যদি ছোটই হয় তাহলে আপনার মতো একজন সাবেক সংসদ সদস্য আমি ছোট মানুষকে নিয়ে ভয় পান কেন? আসলে আপনারা আমাকে নয় জনগণকেই ভয় পান।
অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে দেখুন জনগণ আপনাদের সাথে আছে কীনা। ইউপি নির্বাচনে আপনার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কারণে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তৃণমূলের কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারেন।
আমার নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়ে তাদের মনোবলকে দুর্বল করার গভীর ষড়যন্ত্রে মেতেছেন। আমার প্রতিদ্বন্ধি নৌকা প্রতিকের প্রার্থী শ্রদ্ধেয় বড় ভাই জাহাঙ্গির কবির চৌধুরী।
তিনি উখিয়া টেকনাফের এমপি শাহীন আক্তার আপার ছোট ভাই। তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী। ডিগলিয়ায় আমার প্রচারণায় বাধা প্রদান করছেন অচেনা লোক। আমার মনে হয় তারা রোহিঙ্গা। তাদের কাছে অস্ত্র রয়েছে।আমরা প্রার্থীরা বদলে গেলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। আসুন, আমরা উদারতা সুষ্টি করি। সমাজকে বদলে দেই। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা দেখায়।
অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে যদি আমি পরাজিত হই তাহলে রাজাপালং থেকে সর্ব প্রথম ফুলের মালা এনে আমি বড় ভাই জাহাঙ্গির কবির চৌধুরীকে পরিয়ে দেব। আপনি উন্নয়নের কথা বলেন। তাহলে ভোটে এত ভয় কীসের? ক্ষমতাসীন আওয়ামীললীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিল আওয়ামীলীগ।আমি মনে করি যদি ভোটের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হয় সে ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের সব চাইতে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। আপনাদের ও আমাদের প্রচারণা যেন ভাল হয়। গনতন্ত্রের মূলে রয়েছে জনগণ। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে প্রমাণ করি আমরা জনগণের সেবক।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কুতুপালং কেন্দ্র, ফলিয়াপাড়া কেন্দ্র, পাতাবাড়ি কেন্দ্র ও উখিয়া হাই স্কুল কেন্দ্র এবং উখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অস্ত্রধারী রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে যেন ভোট কেন্দ্র দখল এবং কেন্দ্রের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট না করে সেদিকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কড়া নজরদারি বাড়াতে হবে।
ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা হলে দায় কার? যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্যে এ দায় সরকার ও নির্বাচন কমিশনে এবং প্রশাসনকেই নিতে হবে। নির্বাচনে সহিংসতা এড়াতে আমাদের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচনী আবহাওয়া থাকলেও শঙ্কা বাড়ছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের।
আমার ইউনিয়নে ৪০ হাজার ভোটার রয়েছে। গেল বারের ইউপি নির্বাচনে ফলিয়া পাড়া কেন্দ্রে ভোট ছিড়া, কেন্দ্র দখল, ভোটেরদের বের করে দেয়া এ সব যেন আর না হয়। ২০১৬ সালে ফলিয়া পাড়া কেন্দ্রে আমাদের এজেন্ট ছিলেন আব্দুল খালেক। তার হাতের রগ কেটে দেয়া হয়েছিল।
তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যে আমরা একে অপরকে সহযোগীতা করি। আর জনগণের প্রতি বিশ্বাস রাখি। জনগণ যাকে রায় দেবে তাকে মেনে নিয়ে উন্নয়নের পথে ঐক্যবদ্ধ হই।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-