অনলাইন ডেস্ক •
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নে চিংড়ি ঘেরে ডাকাতির অভিযোগে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মহেশখালী পৌর মেয়র মকসুদ মিয়াসহ তার ৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (২৪ অক্টোবর) মহেশখালী জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
আদালত মামলটি গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। মহেশখালী থানা পুলিশ সোমবার (২৫ অক্টোবর) মামলাটি নথিভুক্ত করেন বলে জানা গেছে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ১৪ লাখ টাকার ঘোনা নামক চিংড়ী ঘেরে গত ১৯ অক্টোবর রাত ৯টায় মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়ার হুকুমে তার ৩০ জন সহযোগী দলবদ্ধ হয়ে চিংড়ী ঘেরে হানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ চিংড়ি মাছ, লবন ও মূল্যবান মালামাল লুট করে এবং চিংড়ি ঘেরের পরিচালক ও কর্মচারীদের মারধর করে।
এ ঘটনায় চিংড়ি ঘেরের অংশীদার ও পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মহেশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা একটি দায়ের করে।
বাদী পক্ষের অ্যাডভোকেট হামিদুল হক জানান, আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আব্বাস উদ্দিন বাদীর আবেদন শুনে মহেশখালী থানার ওসিকে মামলা গ্রহণপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।
মামলার আর্জিতে মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন (১৯ অক্টোবর) রাত ৯টায় মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়ার নির্দেশে মিরাজ উদ্দিন নিশান (২২), মঈন উদ্দিন (৩০), শামশু উদ্দিন (২৮) আতা উল্লাহ বুখারী (৪৫), মোহাম্মদ মামুন (৪২), জাহাঙ্গীর (৪৫), হাসান মোরশেদ (২৫), বদি আলম (৩৫), মোহাম্মদ খোকন (২৫), মোহাম্মদ শান্ত (২৬), জসিম উদ্দিন (২৪), জাহাঙ্গীর আলম (২৮), অহিদুল্লাহ (২৪), নাছির উদ্দিন (৪৫), জিয়াউর রহমান (২৮), ফরিদ আলম প্রকাশ কালা ফরিদ (২৭), একরাম মিয়া (২৯), আলা উদ্দিন (৩৫), আজিজুল হক (৩০), আজিজুল হক (৩৫), সাইফুল হক (২৮), মজিবুর হক (২৬), রিফাত উদ্দিন ফুতাইয়া (২৯), তোফাইল উদ্দিন (২৪), আনোয়ার হোসেন (৩০), মোক্তার আহমদ (৩৫), আবছার (৩৫), লেদু (৩৫), মাহবুবুর রহমান (৩৫), গিট্যা মাহবুবসহ (২৮) আরো ১০/১৫ জন সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করতে করতে ত্রাশ সৃষ্টির মাধ্যমে চিংড়ি ঘেরে নিয়োজিত শ্রমিক নজরুল ইসলাম ও মোঃ ফয়সাল চিংড়ি ঘেরের খামার বাড়ীতে পাহারারত থাকাকালীন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা তার ঘেরে অনধিকার প্রবেশ করে ব্যপক তাণ্ডব চালায়। চিংড়ি ঘের দখল করতে পূর্বেই আহরণকৃত মাছ, জাল, মালামাল লুটপাট ও ডাকাতি করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা এসময় চিংড়ি ঘেরের কর্মচারীদের কুপিয়ে ও গুলিতে আহত করে। পরে তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাদী আরো উল্লেখ করেন, চিংড়ি ঘেরে লুণ্ঠনকারীরা ১৫ মন চিংড়ী মাছ ও মাছ ধরার জালসহ অন্যান্য দেড় লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে।
আমজাদ হোসেন জানান, ঘটনার পর থেকে চিংড়ী ঘের লুটকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় মামলার এজাহার দায়ের করেন। দায়ের করার পরে থানা কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের সহযোগিতা না পাওয়ায় পরবর্তীতে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হাই বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আদালতের নির্দেশে মহেশখালী পৌর মেয়র মকসুদ মিয়াসহ তার ৩০ জন সহযোগীর বিরুদ্ধে আজ ২৫ অক্টোবর (সোমবার) রাতে ডাকাতির অভিযোগে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-