ইয়াবায় বদলে গেলো সুরুত আলমের জীবন !

নিজস্ব প্রতিবেদক: গেল কয়েক বছর আগেও দিন মজুর ছিলেন। থাকতেন মাটির গুদাম ঘরে। এখন তার সে অবস্থা নেই। ইয়াবার চোঁয়াই বদলে গেছে তার জীবনের গতিপথ। তার এখন কোটি টাকার সম্পদ হয়েছে। হয়েছে গাড়ি বাড়িও। পাড়া প্রতিবেশীর মাঝে দান খয়রাতও করেন নিয়মিত। গল্পের মতো বদলে যাওয়া সুরুত আলমের (৩৯) জীবনের কাহিনী এটি।

তিনি উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি বিট অফিস পাড়ার এলাকার মৃত জব্বার আলীর ছেলে। স্থানীয়রা জানান, গেল বছর তিনেক আগেও সংসারে নুন আনতে পানতা পুরাতো তার। এখন এলাকার প্রায় শতাধিক সুপারি বাগান লীজ নিয়েছেন।

বিট অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দখল করেছেন বনের জমিও। তৈরি করছেন তিন তলা ভবন। তার বদলে যাওয়ার গল্পটি স্থানীয়দের হতবাক করে দেয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, রিক্সা ও সিএনজি চালিয়ে কোটিপতি হওয়া সুরুত আলম ইয়াবা পাচার করতে গিয়ে ঢাকার নারায়গঞ্জে ইয়াবা নিয়ে আটক হয়েছেন। আটক হওয়ার পরপরই তার ইয়াবা ব্যবসার সম্পৃক্ততা উঠে আসে। স্থানীয় এক জন প্রতিনিধির ছোটভাইকে নিয়ে সিন্ডিকেট করে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। উঠতি বয়সের যুবকদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেট সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা পাচার করে থাকেন।

অভিযোগ রয়েছে, সুপারি ব্যবসার আড়ালে এখন ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বাড়ির পাশে মুদির দোকান দিয়ে ইয়াবার সম্পৃক্তা আড়াল করতে কৌশলে নেমেছেন।

স্থানীয় বিট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বনের জায়গায় নির্মাণ করছেন ভবন। যেখানে অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তার সিন্ডিকেটের দুই সদস্য ছৈয়দ হোসেন (২৮), মাহফুজ (২৯) এবং কোরবান আলী (৩২) এখনো করাগারে রয়েছেন। প্রতিদিন নিজ বাড়িতেই জমজমাট জুয়া ও মদের আসর বসান। গেল ২২ সেপ্টেম্বর তার বাড়ির পাশে ঘটে যাওয়া র‍্যাবের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনার পর থেকে আতংকে দিন কাটাচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাতে বাড়িতে থাকা না হলেও দিনে দোকানে বসে মাদকের লেনদেন ও হিসাব নিকাশ করেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে, অভিযুক্ত সুরুত আলম ইয়াবাসহ আটকের বিষয়টি স্বীকার করলেও অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন সবকিছু তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। স্থানীয় বিট কর্মকর্তা মো: ইসরাইল হোসেন বলেন, বনবিভাগের জমি দখল করা হয়েছে কিনা খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সনজুর মোরশেদ-মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান বলেন, মাদক কারবারিদের তালিকা করা হচ্ছে। এখন নতুন নামও তালিকায় সংযুক্ত হচ্ছে। তালিকাভুক্ত অনেকেই কারাগারে আছে। আবার অনেকেই জামিনে বেরিয়ে পুনরায় ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। তাদেরও কাউকে কাউকে ফের গ্রেফতারও করা হয়েছে। শুধু বিক্রেতা নয়, মাদক কারবারে অর্থ লগ্নিকারী, পৃষ্ঠপোষক, সংরক্ষক, বহনকারী, খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতা সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর