রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যায় মামলা হয়নি, লাশ হস্তান্তর

বাংলা ট্রিবিউন •

ক্ষমতার লোভ ও জনপ্রিয়তা সহ্য করতে না পেরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিরোধীচক্র ও বিপথগামী একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে। নিহত মুহিবুল্লাহর পরিবার ও অন্য রোহিঙ্গারা এমনটি দাবি করেছেন। এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনও কোনও মামলা হয়নি।

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর লাশ কক্সবাজার জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুনীর উল গীয়াস জানান, নিহতের ভাই হাবিবুল্লাহর কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপর পুলিশি পাহারায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি উখিয়ার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সেখানে জানাজা শেষে মুহিবুল্লাহকে দাফন করা হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ নিহত হওয়ার পর প্রতিটি ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করলে মামলা রুজু করা হবে। আমরা এখনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ না পেলেও হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে নিহত মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিব উল্লাহ দাবি করেন, ক্ষমতার লোভ ও জনপ্রিয়তা সহ্য করতে না পেরে মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিরোধীচক্র ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমার ভাইকে হত্যা করেছে। হত্যাকারীরা আল ইয়াকিনের সদস্য বলে দাবি করেন তিনি।

হাবিব উল্লাহ জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়া কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ক্যাম্পে এশার নামাজ শেষ করে তার পরিচালিত সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর অফিসে অবস্থানকালে ২০/২৫ জনের একটি বন্দুকধারী দল তার মুহিবুল্লাহর ওপর হামলা চালায়। ওই অফিসে কর্মরত অন্যদের মারধর করে ছেড়ে দিলেও মুহিবুল্লাহর বুকে ৫ রাউন্ড গুলি চালায় তারা। এরমধ্যে তিনটি গুলি মুহিবুল্লাহর বুকে লেগে তার মৃত্যু হয়।

নিহত মুহিবুল্লাহ চাচাত ভাই নুরুল আমিন বলেন, ঘটনার সময় মুহিবুল্লাহ ভাইয়ের অফিসেবেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা ছিলেন। কেউ সংবাদ শুনছিলেন, কেউ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করছিলেন। এ সময় বন্দুকধারীরা অফিসে ঢুকে অন্তত ৫ রাউন্ড গুলি করে।

প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় নিজ অফিসে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মুহিবুল্লাহ। এসময় তিন রাউন্ড গুলি তার বুকে লাগে। খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে উখিয়া থানা পুলিশকে মৃতদেহটি হস্তান্তর করে। মুহিবুল্লাহকে হত্যার পর সংগঠনটির অন্য সদস্যও জীবন নিয়ে ভয়ে আছেন।

আরও খবর