পুলিশি হয়রানি বন্ধে সারাদেশে কর্মবিরতির ডাক!

কক্সবাজার জার্নাল ডেস্ক:
রাস্তায় পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ ৬ দফা দাবিতে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সারাদেশ জুড়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে অ্যাপ-বেইজড ড্রাইভারস ইউনিয়ন অব বাংলাদেশ (ডিআরডিইউ)।

আজ সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিআরডিইউ’র সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

বেলাল আহমেদ বলেন, বাড্ডায় অত্যন্ত মর্মান্তিক একটি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে জন্য একজন চালক তার মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এ ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনাও যদি পুলিশ হৃদয়কে নাড়া না দেয়, তাহলে তা খুবই হতাশাজনক।

কর্মবিরতীতে যাবার আগে অ্যাপভিত্তিক ড্রাইভারদের ৬ দফা দাবির কথা জানিয়েছেন ডিআরডিইউ এর সাধারণ সম্পাদক। তাদের দাবিগুলো হলো:

১. অ্যাপস ভিত্তিক রাইড প্রোভাইডারদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিন, তাদের কর্ম ও সময়ের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করুন।

২. সব ধরনের রাইডে কমিশন ১০ শতাংশ নির্ধারণ করুন, মিথ্যা অজুহাতে রাইড প্রোভাইডার ড্রাইভারদের কর্মহীন করা থেকে বিরত থাকুন।

৩. ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মত শহরে রাইড শেয়ারিংয়ের যানবাহনের জন্য আলাদা স্ট্যান্ডের জায়গা দিন।

৪. রাস্তায় সকল ধরনের পুলিশি হয়রানি বন্ধ করুন।

৫. এনলিস্টকৃত রাইড শেয়ারকারী যানবাহনগুলোকে গণপরিবহনের আওতায় অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) মুক্ত রাখুন।

৬. গতবছর গ্রহণ করা সব এআইটি এনলিস্টকৃত যানবাহন মালিকদের ফিরিয়ে দিন।

ডিআরডিইউ’র সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ আরও বলেন, গাড়ি যেখানেই থামান না কেন, ব্রেক করামাত্র সেখানেই ধরে ফেলে ট্রাফিক পুলিশ। তাহলে সরকার আমাদের জন্য আলাদা জায়গা নির্ধারণ করে দিক। তাহলে আমরাও যেখানে সেখানে দাঁড়াবো না। আমাদের শহর অনুযায়ী যতটুকু জায়গা দেয়া যায় ততটুকুই দেয়া হোক, আমাদের জন্য নির্ধারিত স্পট যদি ১০টাও হয়, আমরা সেই ১০ জায়গাতেই দাঁড়াবো।

ডিআরডিইউ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের সমস্যাগুলো সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা কয়েক দফা জানিয়েছি। কিন্তু কোনও প্রতিষ্ঠানই আমাদের অভিযোগ গ্রহণ করেনি। এবার আমরা বাধ্য হয়ে ষষ্ঠবারের মতো আন্দোলনে যাচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবো, আমরা কোনও ভায়োলেন্সে বিশ্বাস করিনা।

এদিকে পুলিশের অভিযোগ, রাইড শেয়ার চালকরা রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে যানজট সৃষ্টি করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিআরডিইউ এর সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ বলেন, আমরা কোনও মোড়েই এলোমেলোভাবে দাঁড়াতে চাই না। কিন্তু আমরা নির্দিষ্টভাবে কোথায় দাঁড়াবো তা আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে বলে দেয়া হোক, তাহলে আমরা সর্বোতভাবে সহযোগিতা করবো।

রাস্তায় পুলিশ কী ধরনের হয়রানি করে জানতে চাইলে বেলাল আহমেদ বলেন, গাড়ির কোনও ছোট্ট অংশেও যদি ড্যামেজ পায় তাহলেও মামলা দেয় পুলিশ। গাড়ি কোথাও দাঁড়ালেই মামলা দেয়। কোনো প্রয়োজনে ব্রেক করলে সেখানেই ধরে ফেলে। আমরা এসব হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।

উল্লেখ্য, এর আগে আজ সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোড এলাকায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের শওকত আলম সোহেল নামে এক মোটরসাইকেল চালক ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন দিলে পরে ওই চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে সেখানে আগে থেকেই ট্রাফিক সদস্যদের বলা ছিল কোনও মোটরসাইকেল সকালবেলা সেখানে দাঁড়াবে না। ঘটনাস্থলে রাইড শেয়ারিংয়ের একটি মোটরসাইকেল দাঁড়ালে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা তার কাছে কাগজপত্র দেখতে চান। কিন্তু মোটরসাইকেল চালক কাগজপত্র না দেখিয়ে উল্টো রেগে নিজের বাইকে নিজেই আগুন ধরিয়ে দেন।

মোটরসাইকেল চালকের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দেয়া হয়েছে বা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‌মামলা এখনও দেয়া হয়নি। তার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার সময় তিনি নিজেই আগুন ধরিয়েছেন।
সূত্র: যমুনা টিভি অনলাইন

আরও খবর